ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে প্রথম টেস্ট হারের পরও ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট জিতে ড্র করে সিরিজ। তবে নিজেদের পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মান বাঁচাতে পারলো না টাইগাররা। একে একে তিন ম্যাচ হেরে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। ফলে ৩ বছর ৯ মাস পর ওয়ানডেতে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৪ উইকেটে। আর বাংলাদেশ ১০ বছর পর ধবলধোলাই হলো ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে। শেষবার ২০১৪ সালে এই ক্যারিবিয়ানেই ৩-০ ব্যবধারে সিরিজ হারে সফরকারীরা।
অথচ সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টানা চতুর্থ আর জাকের আলী, সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসানের ফিফটিতে ক্যারিবীয় দ্বীপে নিজেদের সর্বোচ্চ ৩২১ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। সেই রান অভিষিক্ত আমির জাঙ্গুর সেঞ্চুরিতে ২৫ বল হাতে রেখেই টপকে যায় স্বাগতিকরা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৩১ রানেই ওপরের সারির তিন ব্যাটারকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর চতুর্থ উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন কিয়াচি কার্টি এবং শেরফান রাদারফোর্ড। ব্যক্তিগত ৩০ রানে রাদারফোর্ড ফেরার পরেই ১৩২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন জাঙ্গু এবং কার্টি।
কার্টি অল্পের জন্য করেছেন সেঞ্চুরি মিস। ৯৫ রানে তিনি ফিরেছেন রিশাদ হোসেনের শিকার হয়ে। তবে জাঙ্গু রস্টন চেজ আর গুদাকেশ মোতিকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৮৩ বলে ১০৪ রানে অপরাজিত ছিলেন এই ত্রিনিদাদিয়ান। ৩১ বলে ৪৪ রান করে তার সঙ্গী হয়ে মাঠ ছাড়েন মোতি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়ে খরুচে ছিলেন রিশাদ, ৫৩ বলে ৬৯ রান দেন এই লেগ স্পিনার। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ এবং তাসকিন আহমেদ।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ৯ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারায় সফরকারীরা। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন লিটন। এতে আবারও শঙ্কা জাগে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ার।
তবে ক্রিজে আসা মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সৌম্য। দেখেশুনে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। ৫৬ বলে মিরাজ ও ৫৮ বলে ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। তৃতীয় উইকেটে তারা গড়েছেন ১৩৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। গুডাকেশ মোতির বলে লেগ বিফোরে কাটা পরার আগে সৌম্য ৭৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৩ রানের সুন্দর ইনিংস উপহার দেন।
সৌম্য আউটের পর উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দলীয় ১৭১ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফিরলেন সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৭৩ বলে ৭৭ রানের দারুণ ইনিংস। তাতে একই সিরিজে টানা দুইবার সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ওয়ানডের পর তৃতীয় ওয়ানডেতেও দারুণ ছন্দে ছিলেন মিরাজ, তবে ভাগ্য সহায় হয়নি।
এরপর দ্রুতই বিদায় নেন আফিফও। সাজঘরে যাওয়ার আগে ১৫ রান করেন তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে জাকের-মাহমুদউল্লাহ জুটি চাপ সামলে ফের বড় সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যাট করে। মারকুটে ব্যাটিংয়ে নিজেদের অর্ধশতক তুলে নেন রিয়াদ ও জাকের।
এই দুইজনের ১৫০ রানের অপরাজিত জুটিতে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। উইন্ডিজদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন আলজেরি জোসেফ।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম