
শুরুতে আম্পায়ারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা এবং পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে আম্পায়ারদের তীব্র সমালোচনা করার দায়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) দল মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়কে ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
মোহামেডানের নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলে নেতৃত্ব পান হৃদয়। শনিবারের (১২ এপ্রিল) ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপার দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়েও গেছে মোহামেডান। কিন্তু সে ম্যাচে আম্পায়ারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ানোয় তাকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পাশাপাশি চারটি ডিমেরিট পয়েন্টও দেওয়া হয় তাকে।
কিন্তু ঘটনা সেখানেই থামেনি। ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমে হৃদয় ফের আম্পায়ারদের সমালোচনা করেন। আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়া প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে হৃদয় বলেন, ‘তিনি আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।’ হৃদয় হুমকির স্বরে বলেন, ‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশাআল্লাহ।’
হৃদয়ের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ পরিষ্কারভাবে আইসিসির আচরণবিধি অনুযায়ী লেভেল ২-এর ২.৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ম্যাচ পরবর্তী নিয়মবহির্ভূত ঘটনার জন্য ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রেফারির দ্বিতীয় দফা রিপোর্ট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে নিয়ম মেনেই ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ তার দ্বিতীয় প্রতিবেদনে হৃদয়ের ম্যাচ-পরবর্তী মন্তব্যকে ‘অশোভন, অশালীন এবং আম্পায়ারের প্রতি অবমাননাকর’ হিসেবে উল্লেখ করে আরও ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট দেন।
এতে সবমিলিয়ে হৃদয়ের ডিমেরিট পয়েন্ট সংখ্যা দাঁড়ায় আটে, যার ফলে ৪ ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হলো তাকে।
হৃদয়ের এমন আচরণের বিষয়ে বিসিবির আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার মিঠু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হৃদয়ের এমন আচরণ অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি জাতীয় দলের খেলোয়াড়, তার কাছ থেকে শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশিত। ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন আচরণ না করে, দৃষ্টান্ত তৈরি করতে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের সপ্তম ওভারে মোহামেডান পেসার এবাদত হোসেনের বল আঘাত হানে আবাহনীর ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুনের প্যাডে। অনফিল্ড আম্পায়ার তানভীর আহমেদ আবেদনে সাড়া দিলে ক্ষিপ্ত হন মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়, বোলার এবাদতসহ অন্যরা। একপর্যায়ে লেগ আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গেও উচ্চবাচ্য করেন হৃদয়। সে ঘটনা এবং পরে আগ্রাসী মন্তব্যের কারণে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হলো মোহামেডান অধিনায়ককে।