বৃহস্পতিবার,

০৯ জানুয়ারি ২০২৫,

২৬ পৌষ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

০৯ জানুয়ারি ২০২৫,

২৬ পৌষ ১৪৩১

Radio Today News

মেরাজের রাতে নবীজি আল্লাহকে সরাসরি দেখেছেন?

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

Google News
মেরাজের রাতে নবীজি আল্লাহকে সরাসরি দেখেছেন?

রজব হিজরি ক্যালেন্ডারের অন্যতম মাস।। এ মাসের তাৎপর্য অনেক। এটি হিজরি সনের সপ্তম মাস এবং মুসলমানদের জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। এটি কোরআনে বর্ণিত ‘আশহুরে হুরুম তথা সম্মানিত চার মাস-এর অন্তর্ভুক্ত।

এ মাসের ২৭ তারিখে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে হানি রা.-এর ঘরে ঘুমন্ত থাকেন। হঠাৎ আগমন হয় জিবরাইল আলাইহিসালাম-এর। জিবরাইল আলাইহিসসালাম নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বক্ষ বিদীর্ণ করেন। জান্নাতি পানি দিয়ে অন্তরকে স্বচ্ছ  করেন। তারপর রওয়ানা হন আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাতে।

খুবই দ্রুততম একটি বাহনে আরোহন করেন। নাম তার বোরাক–জান্নাতি একটি বাহন। খুবই দ্রততার সাথে ঐ রাতেই পৌঁছান আল্লাহ তায়ালার আরশে আজিমে। এর আগে জিবরাইল আলাইহিসালাম নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অনেক আশ্চর্যজনক জিনিস দেখান। পৌঁছলে আল্লাহ তায়ালার সাথে মতবিনিময় হয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর।

ইসলামের বিধান কী হবে-সেটাও সেখানে নির্ধারণ করা হয়। এ মতবিনিময় যখন হয় তখন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সরাসরি আল্লাহ তায়ালা-কে দেখেছিলেন কি-না,এ নিয়ে আদিকাল থেকেই মতানৈক্য হয়ে আসছে।একদল বলেন, দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালাকে কারও জন্য দেখা সম্ভব নয়। সুতরাং নবী হলেও আল্লাহ তায়ালাকে দেখেননি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। 

এ দলের মধ্যে রয়েছেন–আয়েশা,আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহুমসহ আরো কিছু সাহাবি,তাবেয়িগণ। কোরআন থেকে তারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন। কোরআনে এসেছে, সকল চক্ষু-ই আল্লাহ তায়ালাকে উপলব্ধি করতে পারে না;কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সকল চক্ষুকে উপলব্ধি করতে পারেন। (সুরা আনআম,আয়াত:১০৩) অর্থাৎ মানুষ আল্লাহ তায়ালাকে দেখতে পারবে না;কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সকল মানুষকে দেখতে পাবেন।

অন্যদল বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তায়ালাকে সরাসরি দেখেছেন। দুনিয়াতে অন্য কারও জন্য সম্ভব না হলেও রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন– ইবনে আব্বাস,আবু হুরায়রা ও আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমসহ অনেক সাহাবি-তাবেয়ি ও ওলামা-ফুকাহায়ে কেরাম। তারা কোরআন-হাদিস দিয়ে প্রমাণ দিয়ে থাকেন।

কোরআনে এসেছে, সে (নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা দেখেছে তোমরা কি সে বিষয়ে তার সাথে বিতর্ক করবে? নিশ্বয়ই সে তাঁকে (আল্লাহকে)  আরেকবার দেখেছিল সিদরাতুল মুনতাহার (প্রান্তবর্তী বদরি বৃক্ষের) নিকট। (সুরা নাজম,আয়াত:১২-১৪)

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি আমার রব আল্লাহকে দেখেছি। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস:২৫৮০)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, তোমরা কি এতে আশ্চর্যান্বিত হও যে আল্লাহ তায়ালা হজরত ইবরাহিম আ.- কে নিজের বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন, হযরত মুসা আ.-এর সাথে কথা বলার দ্বারা এবং হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আপন দর্শন দ্বারা ধন্য করেছেন। (হাকেমে মুস্তাদরাক,হাদিস :২১৭)

এছাড়া যুক্তির আলোকে বুঝে আসে যে,যদি সরাসরি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখেছেন বলে দাবি না করতেন তাহলে মক্কার কাফেররা রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতো না। এছাড়া আরও অনেক তত্ত্বের মাধ্যমে তারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন। মোটকথা, এ বিষয়টি মতানৈক্যপূর্ণ,কেউ সরাসরি দেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আবার কেউ অস্বীকার করেছেন। ইমাম নববি রহ. প্রথম মতামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ( ইমাম নববি কৃত শরহে মুসলিম, কিতাবুল ঈমান,৩/৬-৭, বর্ণনা নং:২৮০)

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের