
জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চার বছর মেয়াদের প্রস্তাব দিলেও জামায়াত চায়, এই মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকুক। তবে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে জামায়াত।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর এই অবস্থানের কথা জানান দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সকাল থেকে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আলোচনার বিরতিতে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ এবং রাষ্ট্রপতির মেয়াদ কমিয়ে চার বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা মনে করছি, এটি যৌক্তিক হবে না। এক্ষেত্রে চার বছর নয়, পাঁচ বছর থাকাই ভালো হবে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী একমত হয়েছে বলে জানান সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের রূপ, কাঠামো ও নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শেষে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
নায়েবে আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মতবিনিময় চলছে। পাঁচটি কমিশনের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। আমরা আলোচনা শুরু করেছি সংবিধান সংস্কারের ওপরে দেওয়া প্রস্তাবনা দিয়ে। আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি। অনেক বিষয়ে আমাদের ভেতরে মতবিনিময় হয়েছে, নানা বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
সংবিধান সংস্কার, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছে জামায়াতে ইসলামী।
সংবিধান সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের আরও বলেন, যেকোনো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে জনস্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।
সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। এটা বাংলাদেশের গণমানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফলাফল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার উদ্দেশ্য থাকবে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন রাজনৈতিক দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জামায়াতের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির। প্যানেল সদস্য হিসেবে আছেন মহিউদ্দিন সরকার।