
কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান কখনই আইন মেনে চলে না, এটার শুরু হয় আইন ভাঙার মাধ্যমে। আইন ভেঙে আবার যে বা যারা গণঅভ্যুত্থান করলো তারা নিজেদের নতুন করে গঠন করবার জন্য নতুন ব্যবস্থা, নতুন আইন, নতুন সংস্কৃতি সৃষ্টি করবে। কিন্তু আমরা উল্টো পথে হাঁটলাম। আমরা জীবন দিলাম, আবার সেই পুরনো ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় ফিরে গেলাম। যে সংবিধান শেখ হাসিনা রেখে গেছেন, তা-ই এখনও রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নিয়ামক। শেখ হাসিনা নেই, কিন্তু তার ভূত এখনও দেশে আছে। এই ভূতের নাম সংবিধান।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রবন্ধ আলোচনা, বৈষম্যবিরোধী কবিতা ও গণসংগীত’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন বাংলাদেশ বিশ্বজয় করতে নেমেছে। আমরা বিশ্বজয় করেই ছাড়বো। আমরা একমাত্র অভিভাবক বঙ্গোপসাগরের। আমরা বঙ্গোপসাগরীয় দেশ। তিনি কিন্তু বলেননি আমরা এটার মালিক। কিন্তু ভারতীয়রা তা বুঝতে পারেনি। তিনি বলেছেন আমরা এটি রক্ষা করবো। যার দ্বারা আমরা, বিশ্ব, চীন ও ভারত উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। অনেক সাংবিধানিক সমস্যা রয়ে গেছে। শেখ হাসিনার ভূত রয়ে গেছে। এই ভূত আমাদের সমস্যা করে। এই ভূত কিন্তু আসবে, বারবার আমাদের ওপর হামলা করবে। তাকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে। আমরা বিশ্বজয় করতে নেমেছি। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান এখনো বোঝেন নাই, তাদেরকে সরল ভাষায় বুঝিয়ে বলছি, বাংলাদেশের ছাত্র-তরুণ এবং সৈনিকেরা একসঙ্গে যে গণঅভ্যুত্থান সফল করেছে, তার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ বিশ্বজয় করতে নেমেছে এবং তারা বিশ্ব জয় করবে। এটা ঠেকানোর সাধ্য কারও নাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা সাহিত্য সংসদের সভাপতি ডা. মো. সালাহ উদ্দিন শরীফ।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক কবি গাজী গিয়াস উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের উপদেষ্টা মো. আলাউদ্দিন এবং ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কবি জসিম উদ্দিন মুহাম্মদ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খন্দকার ইউসুফ হোসেন, রায়পুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম তপন ও চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিক।
অনুষ্ঠান শেষে কবিতা আবৃত্তি ও গণসংগীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।