
রংপুরের সাতমাথা থেকে শতাধিক ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে কাউনিয়া ও পীরগাছার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির যোগসাজশে দেশে পরপর তিন তিনটি ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রংপুরের মাহিগঞ্জ সাতমাথা এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাতমাথা থেকে শতাধিক ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে পীরগাছা ও কাউনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন আখতার হোসেন। এরপর সন্ধ্যায় কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন। এ সময় এনসিপির রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়ন, আরিফুলসহ জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, এই দুই দলের যোগসাজশে দেশের মানুষ দীর্ঘসময় ধরে গণতন্ত্রের আবহ থেকে পরিপূর্ণভাবে বঞ্চিত ছিল। দেশের মানুষ দীর্ঘসময় ধরে যে ফ্যাসিবাদের যাঁতাকলে পিষ্ট ছিল, তার পেছনে সব থেকে বড় শক্তি ছিল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি।
ফ্যাসিবাদী শক্তি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) যদি নির্বাচনে না আসতে পারে তার মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হবে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে ২০২৪ সালে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার মদতদাতা সংগঠন আওয়ামী লীগ। তাদের দোসর জাতীয় পার্টি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের শাপলা হত্যাকাণ্ড, মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই অভ্যুত্থানের যে হত্যাকাণ্ড, প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডেই ব্যক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরাসরি জড়িত। যারা গণআঞ্জাম দেয়, যারা দেশের মানুষের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দেয়, গণতন্ত্রকে লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে, সেই শক্তি কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকামী কোনো মানুষ এবং কোনো দেশ কোনোভাবেই কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তিকে তাদের দেশে রাজনীতি করার অধিকার দেয় না। সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ ইলেকশনের প্রয়োজনীয় উপাদান হতে পারে না। বরং ফ্যাসিবাদী শক্তি যদি নির্বাচনে না আসতে পারে, তার মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হয়। অতএব জাতীয় নাগরিক পার্টি দীর্ঘ সময় ধরে দাবি জানিয়ে আসছে, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। অতিদ্রুত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করতে হবে। দল হিসেবে মার্কা ও মতাদর্শ নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারে না।
নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি ও দল গোছানো প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, দল গঠনের পর আমরা মাসখানেক সময় পেয়েছি। এনসিপিকে মোটা দাগে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। আমাদের মুখ্য সংগঠক যারা আছেন তারা দেশকে আরও ছোট ছোট কয়েকটি অঞ্চলে বিভক্ত করে সারাদেশে আমাদের কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা সারাদেশের মানুষের কাছ থেকে তাদের পজিটিভ রেসপন্স পাচ্ছি। আমরা আশাবাদী খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নির্বাচনে নিবন্ধিত হওয়ার যে শর্তাবলী পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সে শর্তগুলো পূরণ করতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি অবশ্যই একটি গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা রয়েছে। সেই নির্বাচনে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সক্ষম হয়ে উঠবো।