
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) বহিষ্কারের পর আজ মঙ্গলবার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
যেখানে বহিষ্কৃত ছাত্রদের তালিকায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনানও রয়েছেন।
বহিষ্কৃত অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের ইমন খান জীবন, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান শেখ, বিজয় একাত্তর হলের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী এম সাকিব, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি এস এইচ স্বাধীন, বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ওমর ফারুক, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের উপসম্পাদক ওমর ফারুক শুভ, জগন্নাথ হলের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়েলস সরকার; পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের কাউসার হাসান, উর্দু বিভাগের কৌশিক হাসান পরশ, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের খালিদ মাহমুদ মিরাজ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আলম চৌধুরী, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুষার হোসেন, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হাসান অপি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নাবিন হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ, অর্থনীতি বিভাগের নাহিদ ভূইয়া, ইতিহাস বিভাগের নায়েব শাহরিয়ার, অপরাধ বিজ্ঞানের নিঝুম ইফতার, আরবি বিভাগের নিয়াজ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগ কর্মী নুরুল আমিন, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ কর্মী নূরে আলম বিশ্বাস; কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হুসাইন মোহাম্মদ সোহান, ফিন্যান্স বিভাগের হাসান সাইদ, দর্শন বিভাগের হারুন অর রশিদ, ঢাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাগত আহমেদ, আইন বিভাগের সৈয়দ ইশতিয়াক ফারদিন, জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল সুমন, জগন্নাথ হলের সুমন নন্দী, আইন বিভাগের শাহরিয়ার অনন, সূর্যসেন হলের শাহরিয়ার অভি, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের উপদফতর সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বিজয়, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি বিভাগের শুভ আলম, দর্শন বিভাগের শেখ নাসির উদ্দিন, আরবি বিভাগের শোয়াইব আহসান, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ নেতা সজিবুর রহমান সজিবসহ ১২৭ জন শিক্ষার্থী।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রানিং শিক্ষার্থীর পাশাপাশি রয়েছেন কয়েক বছর আগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করা শিক্ষার্থীরাও।
এ বিষয়ে ঢাবির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে অনেক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় তাদের একাডেমিক সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তদন্ত কমিটির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই হামলার সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পথে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। এ ছাড়া জরুরি বিভাগের ভেতরে আহতদের ওপর হামলা করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হয়েছে।