মঙ্গলবার,

০৭ জানুয়ারি ২০২৫,

২৩ পৌষ ১৪৩১

মঙ্গলবার,

০৭ জানুয়ারি ২০২৫,

২৩ পৌষ ১৪৩১

Radio Today News

সিপিবি সাবেক সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০:১৩, ৪ জানুয়ারি ২০২৫

Google News
সিপিবি সাবেক সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপেদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) সভাপতি এবং বিলস্ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ চৌধুরীকে যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। 

শনিবার (৪ জানুয়ারি) বাদ জোহর জানাজা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ডেমরার কামারগোপ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। 

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাকে সর্বস্তরের শ্রমিক জনতার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এ সময় কিংবদন্তী শ্রমিক নেতা, সিপিবি,র উপদেষ্টা, সাবেক সভাপতি, টিউসির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্কপের নেতা, কমরেড শহিদুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি সর্বজনের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।

শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)র ভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সিপিবি'র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সিপিবির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহম্মেদ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-এর পক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের পক্ষে আবুল কালাম আজাদসহ স্কপ নেতারা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

তারও আগে সকাল ৮টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয়ের সামনের অস্থায়ী বেদিতে কমরেড শহীদুল্লাহ চৌধুরী মরদেহে পার্টির নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে আবুল হোসাইন ও জাকির হোসেন রাজু বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

গতকাল  শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ডেমরার নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। তিনি স্ত্রী ও চার ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা আবুল কালাম আজাদ জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় এবং সর্বস্তরের শ্রমিক জনতার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান। 

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের কিংবদন্তী এই নেতা মাত্র ১২ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সংগ্রামী জীবনের যাত্রা শুরু করেন। ১৯৬৯ এর গণ অভ্যূত্থানে সাহসী ভূমিকার কারণে ৬৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে অসামান্য ভূমিকা রাখেন। বহু কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জনের পর স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আপোষহীন কন্ঠস্বর হিসেবে সর্বজন সমাদৃত ছিলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কর্তৃক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র করলে নির্লোভ নিরহংকার দেশপ্রেমিক এই নেতা বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী সরকার প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরীকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর প্রস্তাব দিলে তিঁনি প্রত্যাখান করেন। এমন কি আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সকল জোট থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নিরাপদ দূরে অবস্থান নেয়।
 
১৯৬৪ সালে লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ চৌধুরী। এরপর ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। দেশের প্রতিটি গণ-আন্দোলনে শ্রমিক-জনতার নেতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। 

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের