বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশ বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এ জন্য আমরা লজ্জিত। গত ১৫ বছরে পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশকে যেন আর রাজনৈতিক কুপ্রভাবে পড়তে না হয় সে চেষ্টাই চলছে।
শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে বিভাগের সব ইউনিটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন।
এসএমপি কমিশনার মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন র্যাবের অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক তুরাব নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আইজিপি বলেন- এ মামলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। বর্তমান এসএমপি কমিশনারের প্রতি সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। তুরাবকে হয়ত ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না, তবে সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন- পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। পট পরিবর্তনের সময় কোনও পুলিশ অফিসার মারা যাননি। যারা মারা গেছেন তারা সবাই ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মানতে গিয়ে তারা জনরোষে পড়েছেন। সুতরাং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের চাঙা করাই আমাদের মূল কাজ।
পুলিশের মহাপরিদর্শক আরও বলেন, বিগত সময়ে পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এ জন্য আমরা লজ্জিত। পুলিশকে রাজনৈতিক কুপ্রভাবমুক্ত করতে হবে। তাই পুলিশকে রিফর্ম করার কাজ চলছে।
আইজিপি বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশে মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। অনেকে বাণিজ্য করছেন। এদের মধ্যে আবার কেউ সমাজের বড় নেতাও। তবে আমরা কথা দিচ্ছি- নিরীহ যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না। নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে- তাদের খোঁজে বের করে তদন্তকারী কর্মকর্তা যেন অভয় দেন, আশ্বস্ত করেন।
৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আইজিপি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চাইলে কেউ দিবেন না, ভয়ও পাবেন না। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আছি।
আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের মারধরের বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন- এই বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। বিজ্ঞ আদালত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করবেন।