অনেকেই এখন একাত্তরকে একটু পেছনে রাখার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা ইতিহাস বিকৃতির আরেক প্রচেষ্টা। এভাবে তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের মূল ইতিহাস থেকে জাতিকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমাদের মূল ইতিহাস- এই স্বাধীন বাংলাদেশ আর ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে কেউ যেন খাটো না করে। ইতিহাস বিকৃতি যেন না ঘটে। গত ১৫ বছর ধরে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। ঠিক তেমনি এখন যাতে ইতিহাস বিকৃত না হয় সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, অনেকে মনে করছেন যে, হাসিনা পালিয়ে গেছে কাজ শেষ হয়ে গেছে। অনেকে বলেন- আমাদের এই আন্দোলন চলবে নির্বাচন পর্যন্ত। দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকতা না পাওয়া পর্যন্ত বিএনপিকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি, সেই গণতন্ত্র কথার কথা নয়। এটা একটা কালচার, এটা একটা সংস্কৃতি। আপনি আমি কীভাবে কথা বলব, আমি আমার প্রতিবেশীর সঙ্গে কেমন কথা বলব, আমার রাজনীতির প্রতিপক্ষের সঙ্গে কীভাবে কথা বলব সেই বিষয়গুলো আমাদের গণতন্ত্রের ভেতর দিয়ে শিখতে হবে। গণতন্ত্র মানে এই নয় যে, আওয়ামী লীগ করলে তাকে গলা কেটে ফেলো আর বিএনপি করলে তার মুণ্ডু ছেদ করো। গণতন্ত্র হচ্ছে পরমত সহিষ্ণুতা। তোমার কথা বলার অধিকার আছে, আমার বিরুদ্ধেও কথা বলার অধিকার আছে আমি সেটাকে রক্ষা করবো, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র।
একজন উপদেষ্টার বক্তব্যে নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন উপদেষ্টা যখন এই কথা বলেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য কাজ করছে। এটা অত্যন্ত ঘোরতর অভিযোগ। আমি তীব্রভাবে এর নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং আমি মনে করি যে, এই ধরনের উক্তি তার প্রত্যাহার করা উচিত। দয়া করে রাজনৈতিক দলগুলোকে বা রাজনীতিকে আপনাদের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের সহযোগিতা করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি মুহূর্ত এখন আমাদের সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে। আমাদের প্রতিটি কথা আমাদের মেপে কথা বলা দরকার। আমরা এমন কোনো কথা বলব না, যা আমাদের বিজয়কে নষ্ট করে দেয়, অর্জনকে বিনষ্ট করে দেয়। আমাদের দেশের ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারতে আশ্রয় নিয়ে সে দ্রুত কাজ করছে। তারা (আওয়ামী লীগ) অনেক অপপ্রচার করছে, মিথ্যাচার করছে। যেগুলো বাংলাদেশের জন্য, এই বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত উল্টো কথা। তাই আপনাদের গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জবাব দিতে হবে।
ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।