ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশ। সোমবার সন্ধ্যায় পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে উত্তাল জনতা।
এদিন রাত আটটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় শিক্ষার্থীদের ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
একইসময়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ চলছে কুমিল্লা, খুলনানহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সরকারের কাছে ঘটনায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে সোমবার স্থানীয় হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল দ্বারা হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণে বাংলাদেশ সরকার ক্ষুব্ধ। প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে, বিক্ষোভকারীদের পূর্ব পরিকল্পিত উপায়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে আগ্রাসনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না। সহকারী হাই কমিশনের সব সদস্য গভীর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাংলাদেশ সরকার আরও উল্লেখ করতে চায় যে, গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায়ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই ধরনের জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়।
আগরতলার এই ঘটনা ১৯৬১ সালে ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। যেহেতু কূটনৈতিক মিশনগুলোকে যে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করা স্বাগতিক সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ, কূটনীতিক, অ-কূটনৈতিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানায়।