বাংলাদেশে তালেবানি সরকার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে তা প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তারা খুশি না। এখন তারা সংগঠিতভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। শুধু ভারতের নয়, বরং পুরো বিশ্বের গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং তালেবানি সরকার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে, তা প্রমাণ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, এটি খুবই অন্যায্য। এটি মানুষের মনে ক্ষত সৃষ্টি করছে। যা না বাংলাদেশ না ভারতের উপকারে আসবে।
রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রতিষ্ঠানের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, রেল বা সড়ক যে অবকাঠামোই বলেন না কেন এটি হার্ডওয়্যার। আর হার্ডওয়্যার কখনই সফটওয়্যার ছাড়া চলে না। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের কাছে কি সফটওয়্যার রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি সফটওয়্যারটি দেখছি না। এখন আমাদের প্রয়োজন আলোচনা, বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। প্রায় ১৫ বছর আগে বিসিআইএমের ‘কার র্যালি’ হয়েছিল, এরপর আর কিছু দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) কার্যকর করা কঠিন। এছাড়া বিবিআইএন তো আজকের ধারণা নয়, অনেক আগের, তবে কিছুই হয়নি। বরং এটি কার্যকর করা সবচেয়ে সহজ ছিল। কারণ এর প্রতিটি সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল, নিজেদের মধ্যে তেমন কোনো সংকট ছিল না। ফলে আমাদের অঞ্চলেই কোনো একটি সমস্যা রয়েছে, যা আমাদের সমাধান করতে হবে।
রোববার বিকেলে আলোচনা সভার তৃতীয় সেশনে ‘ইনফ্লুয়েন্সিং দ্যা রিজিওনাল অ্যান্ড গ্লোবাল ডিসকোর্স’ বা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও রাষ্ট্রদূত শ্রীধর ক্ষত্রি, রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফল ডেভেলপিং কান্ট্রিজের মহাপরিচালক অধ্যাপক শচিন চক্রবর্তী, ইউনান একাডেমি অব সোস্যাল সাইন্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. রেন জিয়া, ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের পরিচালক অধ্যাপক ড. ড্রিক উইলেম এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান। তৃতীয় সেশনটি সভাপতিত্ব করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার (বিসিআইএম) দেশগুলোতে এক প্রকার অস্থিরতা চলছে এবং অনিরাপত্তামূলক বিভিন্ন উদ্বেগ রয়েছে। অঞ্চলের প্রধান অগ্রাধিকতার হচ্ছে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা। ফলে অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দূর করতে রাষ্ট্রগুলোকে একত্রে কাজ করতে হবে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে সিপিডির আলোচনা বক্তারা এমনটাই বলেন।