জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আজ (সোমবার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ আসামিকে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করা হবে।
এদিকে, মামলার তদন্তের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানাবে তদন্ত সংস্থা। চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম তাজুল ইসলাম এ আবেদন করবেন। বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে শুনানি করবেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিকে, আগামীকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের হাজির করা হবে তাদের মধ্যে সবাই আওয়ামী আমলের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আগামীকাল ট্রাইব্যুনালে হাজির হবেন যারা-
আনিসুল হক, ফারুক খান, রাশেদ খান মেনন, জুনাইদ আহমেদ পলক, তৌফিক এলাহী, দিপু মনি, সালমান এফ রহমান, ড. আবদুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব) ও হাসানুল হক ইনু।
তারা ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত।
তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুসারে, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং সরকার পতনের দাবিতে হওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলায় রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৭ জন নিহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। দমন-পীড়নের মধ্যেও আন্দোলনকারীরা ৫ আগস্ট গণভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে। সেদিন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।
আদালতের নথি অনুসারে, আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলের ক্যাডাররা নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে দেড় সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয় এবং ২৩ হাজারের বেশি আহত হয়। এদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যান।
গত ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ১৪ জনকে আজ এবং আরও ছয় জনকে ২০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে চিঠি দিয়েছে প্রসিকিউটর অফিস।
গণহত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রসিকিউটর অফিস সময় বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে তদন্ত সংস্থা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম