জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জোরালো করতে বিএনপি ১০ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকে বিএনপির নেতারা মনে করেন, এসব সমাবেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কার্যকর হবে। এ ছাড়া ১৬ ডিসেম্বরসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বড় জমায়েত আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ ২০২৪-এর খসড়া, উপদেষ্টা নিয়োগ এবং সরকারের গঠন নিয়ে আলোচনা হয়। কোনো কোনো সদস্য উপদেষ্টা নিয়োগের নিয়ম ও সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে বৈঠকে ভিন্নমত উঠে আসে। তবে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সমাবেশের দিনক্ষণ নির্ধারণ হতে পারে।
বিএনপি নেতারা জানান, স্থায়ী কমিটির বৈঠকের শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ ২০২৪ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় কমিটির একজন সদস্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার নিয়োগে কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে শুধু এ কারণে তাদের কোনো কাজ অবৈধ হবে না, এ সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এমনকি মামলাও করা যাবে না—এ বিষয়টি উত্থাপন করলে অন্য সদস্যরা তাঁদের মতামত দেন। কোনো কোনো সদস্য মনে করেন, সরকার তাদের সুরক্ষায় এ ধরনের বিধানই করবে তা অনুমেয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকারে কতজন উপদেষ্টা হবেন তা সুনির্দিষ্ট করে না বলায় কোনো কোনো সদস্য এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে পরামর্শ দেন কয়েকজন নেতা। অন্যরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করলে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। সবার আলোচনার পর ১০ বিভাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা একজন নেতা জানান, কিছুদিন পর পর উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চায়। অর্থাৎ একটি সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে হলে যে ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারও তা-ই করছে বলে তাঁদের মনে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে বিএনপি মাঠের কর্মসূচি বাড়াবে।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে মাঠে নামবে বিএনপি। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সোচ্চার হবে দলটি।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম