বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমরা ম্যাচ খেলব শুধুমাত্র ছাত্রলীগের সঙ্গে, যুবলীগের সঙ্গে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে।’ তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে উৎখাত করার জন্য সবার মাঠে নামার প্রয়োজন নাই। শুধু ঢাকা কলেজের ছাত্ররাই যথেষ্ট।’
রাজধানীর জিরো পয়েন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ‘ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চ’ কর্মসূচি শুরু হয়। মঞ্চে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম উপস্থিত আছেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। কর্মসূচি ঘিরে জিরো পয়েন্ট থেকে বায়তুল মোকাররমের দিকের রাস্তা বন্ধ থাকায় আশেপাশের রাস্তাগুলোতে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে।
সারজিস আলম বলেন, এই গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট তো দূরের কথা, এর আশেপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেও ‘গুজব লীগ’ নামতে পারবে না। তাদের মাঠে নামা তো দূরের কথা; বিন্দুমাত্র গুজবের যদি তারা কোনো জায়গায় চেষ্টা করে, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করবো।
তিনি বলেন, “এই ‘গুজব লীগ’ যখন দেখছে রাজপথে কিছু করার সামর্থ নেই। যখন তারা দেখছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিকেক বোধ সম্পন্ন এই ছাত্র-জনতা রাস্তায় আছে, তখন মুখ দেখানোর মতো তাদের মুখ নেই। এই মুখেই বিগত ১৬ বছরে তারা চুনকালি মাখিয়েছে। তাদের জননী নেতাকর্মীদের চুনকালি মাখিয়ে, নিজে মেখে পালিয়েছে। আমার যদি ওইটুকু নৈতিকতা থাকতো, ভালো কাজ করতাম, গার্ড থাকতো, বোল্ডনেস থাকতো- আমি দেশ ছেড়ে পালাতাম না। এই দেশের পুরো ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে নামতো না। সেই জায়গায় তারা তো নিজেরাই চুনকালি মেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।”
আজ রোববার আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণজমায়েত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে এ আয়োজন করে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চ। বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের মূল সড়কে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকা ও গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে। দুপুর ১২টার দিকে কয়েকশ লোককে গণজমায়েত কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নূর হোসেন চত্বরে দেখা যায়, সেখানে বেশ কয়েকজন উৎসুক জনতা জড়ো হয়েছে। এসময় বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। নূর হোসেন চত্বর ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি উপলক্ষ্যে পল্টন ও শাহবাগ যুবদল পরিচয়ে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল বের করতে দেখা গেছে।
শনিবার শহীদ নূর হোসেন দিবসে কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এ কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম