শনিবার,

২৬ অক্টোবর ২০২৪,

১০ কার্তিক ১৪৩১

শনিবার,

২৬ অক্টোবর ২০২৪,

১০ কার্তিক ১৪৩১

Radio Today News

ঢাকায় অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের’

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:৩০, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

Google News
ঢাকায় অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের’

গত পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশব্যাপী মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগের প্রতিবাদ এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নে চট্টগ্রামে গণসমাবেশে করেছে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে নগরীর লালদিঘি মাঠে গণসমাবেশে চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা থেকে সনাতনীরা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশের প্রধান বক্তা বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, সনাতনীদের এ দেশ থেকে উৎখাতের চেষ্টা হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। যে মঞ্চ থেকে স্বাধীনতার ছয় দফা দাবি উঠেছিল, সেই মাঠে বাংলাদেশে সব মঠ মিশনের সাধুরা সমবেত হয়েছেন সনাতনীদের দাবি আদায়ে। সনাতনীদের ওপর যতোই নিপীড়ন হবে, আমরা ততো বেশি ঐক্যবদ্ধ হব। দাবি আদায়ে বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ শেষে আমরা ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করবো।

তিনি বলেন, কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান, সিরিয়া হবে। সাম্প্রদায়িক আচরণ করে বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। 

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, সহনশীলতা লুপ্ত হওয়ায় বারবার ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলেও দেশে স্থিতিশীলতা আসছে না। এতে সম্মানবোধ হারিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষককে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকবো না।

সংখ্যানুপাতিক হারে সংসদে আসন দাবি করে তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের নামে প্রহসনকে মেনে নেবো না। কেউ যদি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনায় জড়িত থাকে, তাদের আসামি করুন, বিরোধিতা করবো না। কিন্তু বেছে বেছে মামলায় আসামি করা হচ্ছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে সংবিধান সংশোধনকে মানবো না। জেএম সেন হলে মামলায় আসামিদের জামিন হয়ে গেলো। আমাদের ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানলে জামিন পায়। আর হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, এটা সুশৃঙ্খল আন্দোলন, রাজনৈতিক আন্দোলন না। আজকের সমাবেশে নানা প্রোপাগান্ডা করা হয়েছে। আমাদের সমাবেশকে রাজনৈতিক ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারীর সঞ্চালনায় গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধামের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, স্বামী গোপীনাথ মহারাজ প্রমুখ।

তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে সনাতনীরা শুধু অবহেলিত ছিল। সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু সনাতনীদের ভাগ্য বদলায় না। যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা সনাতনীদের দুঃখ দুর্দশাকে লুকানোর চেষ্টা করে। সনাতনীদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়, নির্যাতন লুকিয়ে স্বাভাবিকতার কথা বলে। গত ৫৩ বছরে এদেশে হওয়া হিন্দু নির্যাতন, খুনের কোনো বিচার হয়নি। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা বারবার এই ধরণের ঘটনায় উৎসাহিত হয়েছে। প্রতিবার ভোট পরবর্তী বা ক্ষমতার পালাবদলের সময় নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে হিন্দুদের ওপর।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের