শুক্রবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৫,

৫ বৈশাখ ১৪৩২

শুক্রবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৫,

৫ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

সংবিধানে জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: ফরিদা আখতার

রেডিও টুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪২, ১০ এপ্রিল ২০২৫

Google News
সংবিধানে জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: ফরিদা আখতার

মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে কেবল গরু, ছাগল মোটাতাজাকরণ দিয়ে দেখার সুযোগ নেই। এটাকে পুষ্টির মন্ত্রণালয় হিসেবেও দেখবেন। কারণ মানুষ প্রাণীর স্বাস্থ্য আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। অ্যানিমেলকে অসুস্থ্য রাখলে মানুষও সুস্থ থাকবে না। আবার অপুষ্টির ঘটনা আমিষ না খাওয়ার জন্যও ঘটছে। তবে সংবিধানে স্পষ্টভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের অধিকারের কথা বলা হয়নি। ভোট কথা বলাসহ নানা অধিকার নিয়ে কথা হলেও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আলোচনায় নেই। ফলে সংবিধানে জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

আজ বুধবার (০৯ এপ্রিল ২০২৫) বিকেল :০০টায় মিটিং সফটওয়ার জুমে আয়োজিতস্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি মৌলিক মানবাধিকারশীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ), পাবলিক হেলথ ইয়ার্স নেটওয়ার্ক স্বাস্থ্য আন্দোলন যৌথভাবে ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ে আহত অনেক তরুণ ১২/১৩টি অ্যান্টিবায়েটিক রেজিস্টার্ড ছিলো। যা ভয়াবহ। কারণ কৃষিতে প্রচুর কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। প্রাণীর ফিডে অ্যান্টিবায়েটিক ব্যবহার হচ্ছে। আমরা আসলে স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের অধিকার চাই। বিগত সরকার স্বস্থ্যের চেয়ে রাজস্বের দিকে বেশি জোর দিয়েছে। বর্তমানে আমরা স্বাস্থ্যের অধিকারের বিষয়টি বিবেচনা করছি। স্বাস্থ্য খাতের জন্য মৌলিককিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরকে বিষয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিটি সংবিধান সংস্কার কমিশন কাছে প্রস্তাব প্রেরণের আহ্বান জানাচ্ছি।

আলোচক হিসেবে ওয়েবিনারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সল বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সেবা কতোটুকু পাবো সেটা স্পষ্ট করতে হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে যাতে সহজেই মানুষ যেতে পারে এবং সেখানে যাতে গ্রহণযোগ্য চিকিৎসা পাওয়া যায় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবার গণগতমান, স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে জনগণের সচেতনতা অংশগ্রহণ এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকা জরুরি। পাশপাশি মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক . রুমানা হক বলেন, দেশে মেগা প্রকল্পকে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় সেভাবে স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। স্বাস্থ্য সেবা নিতে গিয়ে যাতে কেউ অর্থকষ্টে না ভোগে সেটা রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসায় যদি সরকার যথাযথভাবে ব্যয় না করে তাহলে জনগণ বেসরকারি চিকিৎসা বেছে নিবে এবং চিকিৎসা ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ইমার্জেন্সি কেয়ারে ব্যাপক বিনিয়োগ অর্থায়নের প্রয়োজন। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা বিনামূল্যে করতে হবে। এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছাবে না।

নারীপক্ষের প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন বলেন, দেশে নারী স্বাস্থ্য নিয়ে শোষণ বৈষম্য রয়েছে এবং অর্থায়নেও ঘাটতি রয়েছে। আইন-নীতিমালাতেও নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। নারীর প্রতি অবহেলার কারণে তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হচ্ছে না। সরকারকে দেশের নারীদের চিকিৎসা সর্বপরি মানবাধিকারভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা জনস্বাস্থ্য নিয়ে বেশকিছু সুপারিশ দেন। এসব সুপারিশগুলো হলো, মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বাস্থ্য সেবাকে স্পষ্টভাবে সাংবিধানে লিপিবদ্ধ করা, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের অংশীজনের অংশগ্রহণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ এবং প্রত্যেকের দায় কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা নির্ণয় করতে হবে; বৈষম্যহীন বিনামূল্যে প্রাথমিক জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে;

স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে; দলীয় নিয়ন্ত্রণের বাহিরে এসে সরকারের সংসদীয় জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরেণে সংসদদেরকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে হবে; অনিয়ম, দুর্নীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; এবং রোগ প্রতিরোধ, সীমিতকরণে অধিকার মর্যদার ভিত্তিতে নাগরিক, মিডিয়া, সামাজিক সাংস্কৃতিক বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগিদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, উবেনীগের পরিচালক সীমাদাস সীমু, জনস্বাস্থ্য গবেষক সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা, পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্কের সদস্য-সচিব ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন সিএলপিএ-এর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেমোক্রেসি এন্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক গবেষণা . শরীফ আহমেদ চৌধুরী।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের