গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর চলমান গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতি গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গত মাসে একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত সামরিক আগ্রাসনে অসংখ্য ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, নিহত হয়েছেন এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা এক গভীর মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বারবার আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল তা উপেক্ষা করে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।
সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জোরালোভাবে নিন্দা জানায় গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকাগুলোর ওপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলার, যা মূলত নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযানের অংশ। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলের কাছে জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছে—সব ধরনের সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করতে, সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, যেন তারা তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অবিলম্বে একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যাতে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তার নিরবিচারে প্রবেশ নিশ্চিত করা যায়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার আবারও ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমারেখা অনুযায়ী একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষকে কূটনীতি ও সংলাপের পথে অটল থাকার আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটানো যায়।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পুনর্ব্যক্ত করছে যে, ফিলিস্তিন সমস্যার আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাবসমূহ এবং ফিলিস্তিনিদের শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়ের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে একটি দুই-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক।
