শুক্রবার,

০৭ মার্চ ২০২৫,

২২ ফাল্গুন ১৪৩১

শুক্রবার,

০৭ মার্চ ২০২৫,

২২ ফাল্গুন ১৪৩১

Radio Today News

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো আইসিসিতে পাঠানোর সুপারিশ ক্যাডম্যানে

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ৬ মার্চ ২০২৫

Google News
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো আইসিসিতে পাঠানোর সুপারিশ ক্যাডম্যানে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রধান প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা টোবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ সুপারিশ করেন তিনি।

ক্যাডম্যান বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইউক্রেনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে অভিজ্ঞ। 

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কীভাবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্ত হবে- এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশের ন্যায়বিচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে আদালতের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়েও আলোচনা করা হয়।

আলোচনায় উল্লেখ করা হয়, কিছু পালিয়ে থাকা অভিযুক্তরা বিদেশি রাষ্ট্র দ্বারা আশ্রয় পাওয়ার কারণে সম্পূরক নীতির আওতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে সহযোগিতা প্রয়োজন এবং এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে, যাতে অপরাধীদের সম্পূর্ণরূপে দায়বদ্ধ করা যায়।

সাক্ষাৎকারের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অগ্রগতি এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ট্রাইব্যুনালটি বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহের পর শেখ হাসিনার আগের সরকারের সময় সংঘটিত নৃশংসতা মোকাবেলা করার দায়িত্বে রয়েছে।

ক্যাডম্যান জি৩৭ চেম্বারের প্রধান অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনারের আইনি ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোতে সংশোধনের প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো ‘পূর্ববর্তী স্বৈরাচারী শাসন থেকে স্পষ্ট প্রস্থান প্রদর্শনের জন্য’ প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন। 

মৃত্যুদণ্ডের বিষয় এবং ন্যায়বিচারের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করার জন্য প্রমাণের প্রক্রিয়াগত নিয়ম সংযোজন নিয়েও আলোচনা হয়।

অধ্যাপক ড. ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন দলের কাজের প্রশংসা করেন এবং বলেন, ‘তাদের অবশ্যই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হবে।’ 

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের তথ্য-উপাত্ত অনুসন্ধান মিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাইয়ের নৃশংসতা আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের জানা প্রয়োজন কে ১৪০০ ছাত্র, বিক্ষোভকারী এবং শ্রমিকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছে এবং কারা এর মূল অপরাধী ছিল। জাতিসংঘের অনুসন্ধান মিশন শেখ হাসিনার সরকারের প্রকৃত চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন আমাদের অপরাধীদের দায়ী করতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, অভিযুক্তদের ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল মৌলিক অধিকার প্রদান করতে এবং জনগণের সামনে সত্য ও ন্যায়বিচারের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনাল এবং প্রসিকিউশনকে সম্পূর্ণরূপে সম্পদ প্রদান করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়।

আরেকটি প্রধান আলোচনা ছিল আগের সরকারের দ্বারা চুরি হওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়। উপস্থিতরা এসব সম্পদ পুনরুদ্ধার ও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি এবং প্রক্রিয়াগত ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকারের শেষে অধ্যাপক ইউনূস ক্যাডম্যানকে ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ বাংলাদেশের নতুন ভোরের গ্রাফিতি বইটি উপহার দেন, যা বাংলাদেশি জনগণের নতুন যুগের আশা ও দৃঢ়তার প্রতীক।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের