
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর সম্ভাবনা নিয়ে এক ভার্চুয়াল মিটিং করেছেন স্পেসএক্স ও টেসলার মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে। সে মিটিংয়ের পর প্রধান উপদেষ্টা এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে সুখবরটি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘মিস্টার ইলন মাস্কের সঙ্গে দারুণ এক বৈঠক হলো। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। তার সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু করার আশা করছি।’
এই টুইটের জবাবে স্পেসএক্স ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক মাত্র ৫৮ মিনিটের মাথায় উত্তর দেন, “এটার জন্য মুখিয়ে আছি!”
এদিকে টুইটার এক্সচেঞ্জের পরই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। প্রযুক্তিপ্রেমীরা মনে করছেন, দেশে উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর ক্ষেত্রে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে। বিশেষ করে দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য করতে স্টারলিংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে স্টারলিংকের আগমনের ফলে দেশের টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি বা প্রকৃত বাস্তবায়ন কবে নাগাদ হতে পারে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও এই টুইট এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এরআগে বৃহস্পতিবার ( ১৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা ও ইলন মাস্কের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের তথ্য জানান।
ভিডিওতে করা ওই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার ইস্যু বিষয়ক প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজির প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং স্পেসএক্সের পক্ষে গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার লরেন ড্রেয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড গ্রিফিথস।
তাদের কথোপকথনের সময় স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের নতুন ধরণ ও এর প্রভাবের ওপর জোর দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ইলন মাস্ক।
বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, নারী ও প্রত্যন্ত সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য কীভাবে এই পরিষেবা ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়।
কীভাবে উচ্চগতির ও কম খরচে ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশে ডিজিটাল বিভাজন ঘটাতে পারে, তা নিয়ে দুজনে আলাপ করেন। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক বিবেচনা করে এবং প্রত্যন্ত এলাকায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কথা মাথায় নিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়ে কথা হয়েছে।
এ সময় ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের সংযোগ একীভূত করা লক্ষাধিক মানুষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে এবং দেশকে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করবে।
ইলন মাস্কের সঙ্গে আরও কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন ড. ইউনূস।
এ সময় গ্রামীণ ব্যাংক ও এর ক্ষুদ্রঋণের প্রশংসা করেন ইলন মাস্ক। এই কার্যক্রম দরিদ্রতা দূর করতে বেশ প্রভাব ফেলেছে বলেই মন্তব্য করেন তিনি। মাস্ক বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ভিলেজ ফোনের ব্যাপারে এবং তাদের কার্যক্রম নিয়ে তিনি অবগত।
বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও আর্থিক প্রগতিতে স্টারলিংক পথ তৈরি করে দেবে বলেও মন্তব্য করেন ইলন মাস্ক।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম