রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে যোগাযোগ ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের মিন্টু রোডের বাসায় বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত আসে।
রাত ২টার পর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ রেলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। বৈঠক শেষে রাত আড়াইটার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে মজিবুর রহমান কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং রানিং স্টাফদের কাজে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের সমস্যার সমাধান আগামীকাল (বুধবার) মধ্যেই হবে বলে উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা জনদুর্ভোগ চাই না, এজন্য কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম। মিডিয়ার মাধ্যমে কর্মীদের জানাতে চাই, সবাই কাজে ফিরুন। উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন।”
বৈঠকে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তাদের দাবি পূরণ করা হবে। আগের সুবিধাগুলো বহাল থাকবে।”
কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ফলে রেল চলাচল আবারো স্বাভাবিক হতে চলেছে। এর আগে সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবার দিনভর ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সব ট্রেন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ।
দিনভর দফায় দফায় বৈঠকের পরেও সমঝোতার কোনো পথ না পাওয়া গেলেও রাতে উপদেষ্টার বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমাধান বের হয়। এ প্রসঙ্গে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমস্যার সমাধানে রেল উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সবাই মিলে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।”
মজিবুর রহমান আরও জানান, “২০২২ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক-সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা।
এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। তাঁরা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন তাঁরা।
এছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম