রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য হিসেবে ৬০০ জনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সড়কের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কাজে সহায়তার জন্য তারা প্রত্যেকে পাবেন দৈনিক ৫৬০ টাকা।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের একটি প্রস্তাবে শর্ত সাপেক্ষে সায় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগের অংশ হিসেবে ট্রাফিক পুলিশের কাজে সহায়তার জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন প্রর্যন্ত প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করবেন। দিনে দুই পালায় কাজ করার সুযোগ থাকছে। এই হিসাবে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পেছনে চলতি অর্থবছরের ২৪৫ দিনে আট কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবটি সার্বিক অবস্থা বিবেচনার পর চলতি মাসে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থসচিব অনুমোদন দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রথম পর্যায়ে পুলিশ বাহিনীতে ১০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে।
তিনি জানান, আপাতত পুলিশে কর্মসংস্থান শুরু করা হয়েছে। এরপর তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব বিভাগে এটা করা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এক হাজার ছাত্রকে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০০ শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে অর্থ বিভাগের বাজেট-১ শাখায় চিঠি দেওয়া হয়। এতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ১০ ধারা অনুযায়ী সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দৈনিক ভাতার হার পুনঃউপযোজন ও অর্থ ব্যয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের দৈনিক ভাতার হার নির্ধারণ করে অর্থ বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীন এলাকায় ৩৩৯টি পয়েন্টে চার হাজার ১১৫ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, শৃঙ্খলাজনিত কারণে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের ব্যবহার করতে পারছে না ডিএমপি। তাই ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ১০ ধারা অনুযায়ী ৬০০ জন সহায়ক পুলিশ সদস্যের ভাতা নির্ধারণের অনুরোধ করা হলো।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবে সহায়ক পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ৬০০ জন। প্রতিদিন পালাক্রমে ৪ ঘণ্টা করে কাজ করবেন তারা। প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দ্বিতীয় পালা চলবে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রতিদিন চার ঘণ্টা কাজের জন্য ভ্যাট-ট্যাক্সসহ তাঁরা জনপ্রতি ৫৬০ টাকা পাবেন। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই নিয়োগ বহাল থাকবে।
শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগে সায়
শুধু জরুরি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত করতে হবে। সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের জন্য ভাতা আগামী জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। অস্থায়ী ভিত্তিতে এই নিয়োগ হচ্ছে। সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় বহন করতে হবে। অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করা যাবে না। এ ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা দিতে হবে। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয় নিশ্চিত করতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।