পুরো দেশ যখন সংস্কারের পক্ষে, তখন প্রশাসন ক্যাডাররা তা বন্ধের চেষ্টা করছেন। রাষ্ট্রের কাজে মনোনিবেশ না করে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করছেন। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে অচল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের এই কর্মকাণ্ড ফ্যাসিস্ট আমলের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন দেশে-বিদেশে কর্মরত বিভিন্ন পেশার ৩৮ বাংলাদেশি। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ রিসার্চ এনালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রশাসন ক্যাডারদের অভূতপূর্ব ক্ষমতা এবং সুবিধা দিয়েছিল। এর বিনিময়ে প্ৰশাসন ক্যাডার এবং পুলিশ সার্ভিস ছিল সেই স্বৈরাচারী সরকারের অবৈধ, অগণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রধানতম সহযোগীদের অন্যতম। ৫ আগস্টের পরে পুলিশ বাহিনী, সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব শেখ হাসিনার সরকারের দুঃশাসনের সহযোগী হিসেবে দ্বায় স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু প্রশাসন ক্যাডার থেকে এরকম কোনো ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, দ্বায় স্বীকারোক্তি ও আসেনি।
এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি ক্যাডাররা সব সময় নিজেদের ক্ষমতা এবং সুবিধার জন্য একাট্টা হয়ে দেশকে জিম্মি করে কাজ আদায় করে। এরাই ১৯৯৬ সালের জনতার মঞ্চ আর বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অবৈধ নির্বাচনের কারিগর। শ্বেতপত্র অনুসারে আমলারা দুর্নীতিতে প্রথম এবং বেগমপাড়াতে বাড়ি করাতেও তারা সবার চেয়ে এগিয়ে। দুঃখের কথা, এখন পর্যন্ত এই সরকার কারো বিচার না করে উপরন্তু অনেককে ‘বঞ্চিত’র ছুতোয় ভূতাপেক্ষা প্রমোশন দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। যেহেতু কোনো শাস্তির ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না, ক্যাডাররা জোট বেধে সরকারকে অচল করে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যা সরাসরি সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ৩০ ধারার লঙ্ঘন। আইনমতে, তারা সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য। সরকারকে সব ধরনের ইনডেমিনিটি বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুসারে তদন্ত করতে হবে।
সচিবালয়ে আগুনের মধ্য দিয়ে কারা দুর্নীতির তথ্য নষ্ট করে ফেলছে, তা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিবৃতিদাতারা। তারা বলেছেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে ‘ক্যাডার’ নামক কুলীন শ্রেণি সবকিছুতেই বৈষম্য তৈরি করে। আর এই জন্য জনপ্রশাসনে সংস্কার জরুরি। জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধাচরণ করা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নতুন বাংলাদেশে তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে যেতে পারবে কিনা, তা ভাবার সময় এসেছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম