প্রতিবাদের নামে চাকরির নিয়ম লঙ্ঘনকারী আমলাদের পাশাপাশি আগের শাসনামলের দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ ২০২৪-এর প্রথম দিনের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এ বার্তা দেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজও আমরা এ বিষয়ে একটি বৈঠক করেছি। আগামী সপ্তাহে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবাদের নামে চাকরির নিয়ম লঙ্ঘনকারী আমলাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগের সরকারের আমলের আমলাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্নভাবে লুকিয়ে থাকা আগের সরকারের শাসনামলের আমলাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আমলাদের কাছ থেকে বিবৃতি শুনছি। তারা এক ধরনের হুমকি দিচ্ছে। পূর্ববর্তী শাসনামলে তারা এই ধৃষ্টতা অর্জন করেছিল যখন আমরা আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আমলাতন্ত্রকে শক্তিশালী হতে দেখেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমলাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি: এটা জনগণের সেবা করা এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করার সময়। প্রতিবাদ নিয়ে খেলা বা গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষার জন্য এত প্রাণ বিসর্জন দেওয়া হয়নি।’
‘সংস্কার বাস্তবায়ন হলে সবাই ন্যায়বিচার পাবে। আমলারাও এই সংস্কারে একটি কণ্ঠস্বর থাকবে এবং তাদের মতামত শোনা হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তবে, সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়ার পরে তারা যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, সেটা নৈতিক বা আইনগতভাবে ন্যায়সঙ্গত ছিল না। তারা সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করেছে’।
নাহিদ ইসলাম সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক সম্প্রীতি ও ঐকমত্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘একই সঙ্গে তারা সরকারের ভুল ও সীমাবদ্ধতার সমালোচনা করছে। আমরা সেই বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর সরকার গঠনের ধরন পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়নি। এক অর্থে, এটি একটি সাংবিধানিক সরকার নয় আবার অন্য অর্থে এটি একটি বিপ্লবী সরকারও নয়। অন্তর্বর্তী সরকার একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকালে অভ্যুত্থানকালীন এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছিল তা ধরে রাখার প্রত্যাশা করে নাহিদ বলেন, ‘আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি কারণ গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে সংগ্রামের মাধ্যমে সংস্কারের ধারণা এসেছে। যা সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং দেশবাসীও উপলব্ধি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবেই আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে টেকসই বৈদেশিক নীতির পাশাপাশি অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠতে পারি।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম