দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআইতে হামলা-নাশকতা প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা বিষয়ে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এ বিষয়ে নিয়মিত পর্যালোচনা করা হয় বলে জানিয়েছেন সেনাসদরের কর্নেল-স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।
বৃহস্পতিবার ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে দায়িত্ব পালন করবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় উল্লেখ করে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনী শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। সুতরাং সরকারের সিদ্ধান্তেই সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চাপ নেওয়ার জন্যই সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।’
কক্সবাজার এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে কিনা– প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি এই মুহূর্তে নেই। সেনাবাহিনী সবসময় ওই এলাকায় সতর্ক অবস্থায় কাজ করছে। যদি কখনও ঝুঁকি আসে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত। তা ছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য বাহিনী কাজ করছে।’
বান্দরবানে ত্রিপুরাদের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিনি বলেন, এটা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হয়েছে। অন্য কোনো কারণ ছিল না।
কর্নেল ইন্তেখাব জানান, বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে (গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার) ৬৭টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে ১৩ বার মূল সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ভূমিকা রেখেছে এবং কারখানাগুলোকে চালু রাখার জন্য মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে বর্তমানে দেশের ২ হাজার ৯৩টি গার্মেন্ট কারখানার মধ্যে একটি ছাড়া সবই চালু রয়েছে। শিল্পাঞ্চল ছাড়াও সেনা সদস্যরা বিগত এক মাসে ৪৫টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ৫টি, সরকারি সংস্থা বা অফিস সংক্রান্ত তিনটি, রাজনৈতিক কোন্দল সাতটি এবং অন্যান্য ঘটনা ছিল ৩০টি। এ ছাড়া ১৯ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় সেনা সদস্যরা পুলিশকে প্রত্যক্ষ সহায়তা প্রদান করে।
কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ৩ হাজার ৫৮৯ ছাত্র–জনতাকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৬ জন এখনও চিকিৎসাধীন। শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হুসেন রংপুর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।