প্রতি বছরের ডিসেম্বরে বর্ষসেরা দেশের নাম ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ম্যাগাজিনটির এবারের বর্ষসেরা দেশের খেতাব পেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় দ্য ইকোনমিস্ট।
এবারের তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি বর্ষসেরা দেশের খেতাব জয়ের দৌড়ে ছিল সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড। তবে গণমাধ্যমটির সংবাদদাতাদের মধ্যে ‘উত্তপ্ত বিতর্ক’ শেষে সেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। রানার-আপ হয়েছে সিরিয়া।
সেরা দেশ নির্বাচনের সময় সাধারণত ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ নয়, গত ১২ মাসে যেই দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই দেশকে সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করেন। এক সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিলেও পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অংকের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
প্রতিদবেদনটিতে আরও বলা হয়, নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার; যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।
তবে, একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং আরও উদার সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের এ বছরের সেরা দেশ বাংলাদেশ। এছাড়া সিরিয়া এ বছরের রানার্সআপ নির্বাচিত হয়েছে, যেখানে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পোল্যান্ডও এই তালিকায় স্থান পেয়েছে তাদের অর্থনৈতিক সংস্কার ও নতুন সরকারের গঠনের কারণে।
পূর্ববর্তী বছর ২০২৩ সালে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর বর্ষসেরা দেশ ছিল গ্রীস, যারা দীর্ঘ আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সফল হয়েছিল এবং একটি সংযত মধ্যপন্থী সরকার পুনর্নির্বাচিত হয়েছিল।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম