রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে ২০২৫ সালে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। গত সেপ্টেম্বরে ৭৯তম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) সপ্তাহব্যাপী উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে রেজ্যুলেশন গৃহীত হওয়ার পর বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি কীভাবে একটি জটিল ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তা বর্ণনা করেন।
এ সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় গত সাত বছরে কোন বাস্তব অগ্রগতি হয়নি বলেও তিনি হতাশা প্রকাশ করেন ।
ওআইসি ও ইইউ কর্তৃক যৌথভাবে পেশ করা ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি ইউএনজিএ’র তৃতীয় কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে, এটিকে ১০৬টি দেশ সমর্থন দিয়েছে। যা আন্তর্জাতিক সমর্থনের একটি উল্লেখযোগ্য স্তরে পৌঁছেছে।
প্রস্তাবটির মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০২৫ সালে যতটা দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের একটি উচ্চস্তরের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য একটি ব্যাপক, উদ্ভাবনী, সুনির্দিষ্ট ও সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা প্রস্তাব করার জন্য সম্মেলনের লক্ষ্য সামগ্রিক সংকট পর্যালোচনা করা।
এ বছর অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে প্রস্তাবটি অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সকল শরণার্থীর প্রত্যাবর্তনের অধিকার নিশ্চিত করার এবং স্বেচ্ছা, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন ও পুনর্মিলনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এতে হত্যা, ধ্বংস ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা, শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক- বিশেষ করে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক সশস্ত্র বাহিনী অথবা সশস্ত্র গ্রুপে নিয়োগসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহারের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
প্রস্তাবে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সমস্ত দায়বদ্ধতা প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রস্তাবটি একটি আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয় এবং সম্পূর্ণভাবে পাঁচ দফার ঐকমত্যের উদ্যোগগুলোকে তুলে ধরা হয়।