বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সত্য ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিস্থিতি তুলে ধরা।
শফিকুল আলম বলেন, "ট্রাম্প শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের নেতা হতে পারেন, তবে আমাদের কাজ হচ্ছে সবচেয়ে স্বচ্ছভাবে এবং বাধ্যতামূলক উপায়ে সত্য তুলে ধরা।" তিনি জানান, অধ্যাপক ইউনূস বিদেশি সাংবাদিক ও গবেষকদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যাতে তারা দেশের প্রকৃত অবস্থা নিজেরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। তিনি বলেন, "আমরা আমাদের জনগণ ও দেশ সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী।"
তিনি নেত্র নিউজকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে মিথ্যা প্রচারের ভিত্তিহীনতা তুলে ধরেছে।
শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলেন, ‘এতে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে প্রচারিত কিছু মিথ্যাচারকে ভেঙে দিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে উন্মত্ত জনতার হামলা ও লুটপাট চলছে, যা দেশটিকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।” এর পরিপ্রেক্ষিতে শফিকুল আলম বলেন, সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কোনো সহিংসতা ঘটেনি এমনটা নয়, তবে ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত করে নেতিবাচক আখ্যান তৈরি করা হচ্ছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অস্বীকার করছি না যে কিছু ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতা ঘটেনি। কিন্তু সেগুলো ছিল বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তারপরও অতিরঞ্জিত।
মিথ্যা কোনো বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায় না, জনগণের সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি ও মানুষ হিসেবে তাদের সম্মান করতে হবে। ক্ষণিকের মধ্যে সেই অনুপ্রাণিত গোষ্ঠীগুলো জয়ী হতে পারে। তবে শিগগিরই তারা বুঝতে পারবে যে তাদের আখ্যানের কোনো ভিত্তি নেই। নিউইয়র্কের গণপরিবহন ও ভ্যান নিয়ে যতই সোশ্যাল মিডিয়ায় বুস্টিং করা বা ব্যানার থাকুক না কেন, তা তাদের কোনো কাজে লাগবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “ধর্ম নির্বিশেষে সংখ্যালঘু সুরক্ষা অপরিহার্য,” এবং এ বিষয়ে ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি নেত্র নিউজের একটি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদনও শেয়ার করেন যা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়ে কিছু গোষ্ঠীর মিথ্যাচারের প্রকৃতি তুলে ধরেছে।