
মাইকেল জ্যাকসন
শুধু গান-গাওয়া তারকা ছিলেন না তিনি, ছিলেন একাধারে গীতিকার, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেতা। লাখো ক্যাসেট আর সিডি বিক্রি হয়েছে তার, পেয়েছিলেন ১৫টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড। সবচেয়ে বড় কথা, সংগীতবিশ্বে তিনি এনেছিলেন নতুন এক ঝলক। জীবনও তাকে দু'হাত ভরে দিয়েছিল ঐশ্বর্য। বলছিলাম কিং অব পপ মাইকেল জ্যাকসনের কথা, যিনি আজ থেকে ১২ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের এই দিনে পারি জমান না ফেরার দেশে।
জ্যাকসন পরিবারের ৮ম সন্তান মাইকেল মাত্র ৫ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে পেশাদার সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তখন জ্যাকসন ফাইভ নামের সঙ্গীত গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে গান গাইতেন। এরপর ১৯৭১ সাল থেকে একক শিল্পী হিসাবে গান গাইতে শুরু করেন জ্যাকসন।
তাকে পপ সঙ্গীতের রাজা (King of Pop) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কেউ আবার সংক্ষেপে তাকে এমজে (Mj) নামেও ডাকেন। সঙ্গীত, নৃত্য এবং ফ্যাশন জগতসহ ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে চার দশকেরও অধিককাল ধরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।
শুধু গানই গাননি, বর্ণবাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন । ১৯৮২ সালে তাঁর ‘বিলি জিন’, এরপর ‘থ্রিলার’ তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল কোন উচ্চতায়, সে কথা কারোই অজানা নয়। মিউজিক ভিডিও কেমন হওয়া উচিত, সেটা ‘থ্রিলার’ হাতে–কলমে দেখিয়ে দিয়েছিল। ১৪ মিনিটের এই ভিডিও তৈরি করতেতখনকার সময়ের পাঁচ কোটি ডলার খরচ হয়েছিল!\
জ্যাকসনের ‘মুনওয়াক’কারোই ভুলবার নয়। এরই মাঝে কখনও হার মানিয়েছেন মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকেও। একদিকে জ্যাকসন গান গাইছেন, সাথে নাচ। দর্শকদের আর কী চাই?
মাইকেলের গাওয়া ৫টি সঙ্গীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে - অফ দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)।
তার কনসার্টের ব্যাপারে কিছু কথা না বললেই নয়। ১৯৯২ সালে ‘দ্য ডেনজারাস ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ চলেছিল পাঁচ মাস ধরে। এই সময়ের মধ্যে জ্যাকসন করেছিলেন ৬০টি কনসার্ট। মৃত্যুর আগে জ্যাকসনের মাথায় সেরকমই একটি ভাবনা এসেছিল। ভেবেছিলেন, কনসার্ট নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়বেন বিশ্ব সফরে। আর প্রথম ১০টি কনসার্ট থেকে আয় করবেন পাঁচ কোটি ডলার। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি। তার আগেই জীবনকে বিদায় জানান এই কিংবদন্তি।