
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে অসত্য তথ্য দিয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে। গুলশানের ওই অ্যাপার্টমেন্ট সম্পর্কে লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশেও তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ডেইলি মেইলকে তিনি বলেছেন, ২০০২ সালে মা-বাবার কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন।
২০১৫ সালের মে মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘বৈধভাবে’ তিনি ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর কাছে সেটি হস্তান্তর করেন। একই বছরের জুনে ওয়েস্টমিনস্টারে এমপিদের জমা দেওয়া সম্পদের হিসাবে বলা হয়েছিল, পরিবারের একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ওই সম্পত্তির মালিকানায় আছেন টিউলিপ। পরের মাসেই ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তর করার কথা বলা হয়েছে সেখানে। কিন্তু ডেইলি মেইল বলছে, সম্প্রতি ঢাকার সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে ভিন্ন তথ্য পেয়েছে তারা।
সেখানে সংরক্ষিত নথি বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক এখনো ওই ফ্ল্যাটের মালিক, যা দুদকের অভিযোগের সঙ্গেও মিলে যাচ্ছে। চলতি বছরের ১০ মার্চ দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর বোনকে গুলশানের ফ্ল্যাটটি হস্তান্তরে যে নোটারি ব্যবহার করেছেন, তদন্তে তা ‘ভুয়া’ প্রমাণিত হয়েছে।
টিউলিপ ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা রূপন্তীকে ‘হেবা’ করে দেন। হেবা দলিলটি হয় ২০১৫ সালের ৯ জুন।
সেখানে দাতা ছিলেন রিজওয়ানা সিদ্দিক (টিউলিপ সিদ্দিক); গ্রহীতা আজমিনা সিদ্দিক। দলিলে বলা হয়, বোনের প্রতি ভালোবাসা ও স্নেহ থেকে সম্পত্তি হেবা করে দিতে চান দাতা।
দলিল অনুযায়ী, ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় কেনা গুলশানের ফ্ল্যাটটি আজমিনা সিদ্দিককে দেওয়া হয়। দলিলে ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মালিকানা, স্বত্ব, অধিকার এবং একটি পার্কিং স্পেস হস্তান্তরের কথা বলা রয়েছে। সেই দলিল অনুযায়ী ফ্ল্যাটের অবস্থান, গুলশান রেসিডেনশিয়াল মডেল টাউনের ১১ নম্বর প্লটে।
এটি ভবনের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের একটি ফ্ল্যাট। দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে হেবা দলিলটি সম্পন্ন হয়। সেই হেবা দলিলে স্বাক্ষর রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের। তবে তিনি বলেছেন, স্বক্ষরটি তাঁর নয়।
টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী বলেছেন, যথাযথভাবেই হেবা সম্পন্ন করা হয়েছিল এবং টিউলিপ পরিবারের সদস্যের সঙ্গে যৌথভাবে ফ্ল্যাটের মালিকানায় থাকার কথা ঘোষণাও করেছিলেন, যেহেতু ফ্ল্যাটের ভাড়া তাঁর বোনই পেতেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম