ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির তথ্য চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ চার প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদক উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে আওয়ামী লীগ আমলের মেগা আটটি প্রকল্প-সংক্রান্ত তথ্য আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ছাড়াও এসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ও তাদের বিদেশে অর্থ পাচার-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা শাখায় (বিএফআইইউ) দুটি, পাসপোর্ট ও ফিঙ্গার প্রিন্ট-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, রেকর্ডপত্র চেয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গার প্রিন্ট-সংক্রান্ত তথ্য, রেকর্ডপত্র চেয়ে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে অভিযুক্তদের অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছে। দেশের প্রচ্ছায়া লিমিটেড ও যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত জুমানা ইনভেস্টমেন্ট নামের কোম্পানির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন অফশোর অ্যাকাউন্টে প্রচুর অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে। এটি অনুসন্ধান করছে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল।
বিএফআইইউ মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশনাল হেডের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা লোপাট ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব দেশে অর্থ পাচার-সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবের বিকলন স্থগিত করা প্রয়োজন।
বিএফআইইউতে পাঠানো আরেক চিঠিতে অভিযুক্তদের যাবতীয় ব্যাংক হিসাব, তাতে জমা অর্থ, লেনদেন, স্থিতি, হিসাব খোলা-সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রকল্প বাস্তবায়নের আড়ালে ২১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প, মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন, মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব/প্রাক্কলন, বাজেট অনুমোদন, বরাদ্দ, অর্থ ছাড়, ব্যয় অর্থের পরিমাণ-সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র এবং এসব প্রকল্প নিয়ে তদন্ত হয়ে থাকলে প্রতিবেদন ও প্রকল্প সময়ের পৃথক সারসংক্ষেপের কপি চেয়েছে দুদক।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম