ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় যে তিনজন ডাকাতি করতে আসে, তাদের দু’জন কিশোর ও একজন তরুণ। একজনের বয়স ২২; অন্য দু’জনের ১৬ বছর। তারা কোনো চলচ্চিত্র বা ভিডিও গেমস দেখে একটি ফ্যান্টাসিতে ভুগে এ কাজ ঘটিয়েছে। তারা ১৮ লাখ টাকা ব্যাগে নিয়েছিল। এ টাকা দিয়ে একজন কিডনি রোগীকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি আইফোন কেনার পরিকল্পনা ছিল বলে জানিয়েছে। তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছে, সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। আদৌ সত্য কিনা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তাদের (ডাকাতদের) অপরাধী বলা যায় না। তারা হয়তো মিস গাউডেড। তারা অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে হয়তো এ ডাকাতি করতে আসে। মুভি দেখে এমন একটি অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ডাকাতি করতে এসেছিল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।
অভিযানের বিষয়ে এসপি আহম্মদ মুঈদ বলেন, ঘটনার শুরু থেকেই আইজিপি লাইভে এসে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়া যেন অভিযান শেষ হয়। এ জন্য ডাকাতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেছি। ডাকাতদের আইজিপি স্যারের সঙ্গেও কথা বলিয়ে দেওয়া হয়।
বাইরে ডাকাত দলের কেউ ছিল কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনজন ছাড়া বাইরে কেউ ছিল না। তবে তারা প্রাথমিকভাবে আমাদের বলেছিল, বাইরেও তাদের লোক আছে। পুলিশকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিল মনে হয়।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ডাকাতদের একটি গ্রুপ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছয় গ্রাহক ও ব্যাংকের ১২ জনকে জিম্মি করে মেঝেতে বসিয়ে রাখে। ডাকাতদের মুখে মাস্ক ছিল।
ব্যাংকের ভেতরের একটি ফুটেজে দেখা যায়, মেঝেতে বসে থাকা গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের পাহারা দিচ্ছে ডাকাতরা। এক ডাকাতের পেছনে একটি ব্যাগ ছিল, চেয়ারে বসা। আরেকজন দাঁড়িয়ে চারদিকে নজর রাখছিল। ভিডিওতে বাকি ডাকাতকে দেখা যায়নি।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি সোহরাব আল হাসান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন তাদের নাম শারাফাত, নীরব ও সিফাত বলেছে। নামগুলো সঠিক কিনা, যাচাই করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে চারটি খেলনা পিস্তল, দুটি চাকু ও একটি ড্রিল মেশিন। তিনজনের মধ্যে দু’জন কেরানীগঞ্জের; একজনের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী।