নড়াইলের খুকুরানী নামের একজন নারীর বক্তব্য প্রচার করে বাংলাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় ভারতীয় মিডিয়া। ওই বক্তব্যে খুকুরানীকে বলতে শোনা যায়, তাদের বাড়িতে পূজাসহ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করতে নাকি বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে খুকুরানীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ভারতে যাওয়ার পর উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে ভুল বুঝিয়ে এমন বক্তব্য নেয় ভারতীয় মিডিয়া।
খুকুরানীর ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্য শোনার পর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন তার ছেলে অমলেন্দু বিশ্বাস। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমার মা ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আমি সবটুকু শুনেছি। সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। আমি ওই বক্তব্য দেখার পরে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মা জানিয়েছেন, তাকে ভারতীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, এই কথা বললে বাংলাদেশের হিন্দু বা ইসকনদের ভালো হবে। তাকে ভুল বুঝিয়ে এবং প্ররোচিত করে তার কাছ থেকে এমন বক্তব্য নিয়েছে।’
জানা যায়, নড়াইল সদর উপজেলার বোড়ামারা (শিকদার পাড়া) গ্রামের অরবিন্দু বিশ্বাসের স্ত্রী খুকুরানী বিশ্বাস গত ২ ডিসেম্বর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যান। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ইসকন নেতা চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটে। যা ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হচ্ছে। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঝড় তোলে খুকুরানী নামে ওই নারীর বক্তব্য।
নড়াইলের স্থানীয় হরিচাদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করছি। কখনো কারও সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এখানে বাস করছি।’
কলেজ শিক্ষক শিকদার জাহাঙ্গীর আলম মিঠু বলেন, ‘আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই এখানে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। খুকুরানী আমাদের বৌদি হয়। তিনি একজন সামাজিক লোক। সবার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। তবে কী কারণে তিনি ভারতীয় মিডিয়ায় এমন বক্তব্য দিয়েছেন সেটা বোধগম্য নয়।’
ভারতে অবস্থানরত খুকুরানী বিশ্বাস ভারত থেকে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, ‘আমি যা বলেছি ভুল করে বলেছি। বাংলাদেশি হিসেবে আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’
নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খুকুরানী নামে এক মহিলার ভিডিও বক্তব্য আমরা দেখেছি, বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে খোঁজখবর নিয়েছি। ওই এলাকায় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, যা ওই মহিলা বলেছেন। কেউ তাকে প্রভাবিত করে ওই বক্তব্য নিয়ে থাকতে পারে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম