হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শতভাগ ধূমপানমুক্ত থাকার কথা থাকলেও ৮৮% হাসপাতাল এবং ৫৮% শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতর ধূমপান করতে দেখা গেছে। লঞ্চ-ফেরীতে ধূমপান করতে দেখা গেছে ১০০ শতাংশ। এছাড়াও পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ৫৭% পাবলিক প্লেসে এবং ৪৪% পাবলিক পরিবহণে ধূমপান করতে দেখা গেছে। বিভাগীয় শহরগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা সংক্রান্ত গবেষণায় দেখা যায়, ৪২% পাবলিক প্লেসে এবং ৩৭% পাবলিক পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) কর্তৃক ‘৮টি বিভাগীয় শহরে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা’ শীর্ষক একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বুধবার (১২ জুন) সকাল ১১টায় টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ডেভলপমেন্ট এ্যাকটিভিটিস অফ সোসাইটি (ডাস্) ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সম্মিলিত উদ্যোগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে “পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা” শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
গবেষণার জরিপ থেকে জানা যায় দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি সবচেয়ে বেশি আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহসহ মোট ০৮ টি বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮৮% বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘনের চিত্র পাওয়া গেছে। ১৭% পাবলিক প্লেসে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দ্বারা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে, টাস্কফোর্স গুলোকে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে দেশের তামাক ব্যবহারের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। দেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোঃ নাইমুল হক বলেন, দেশ থেকে তামাক নির্মূল করতে হলে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে দায়িত্বসহকারে কাজ করতে হবে। সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ, তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সর্তকবাণী বৃদ্ধি ও স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং চালুর কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালে ধূমপানের চিত্র অত্যন্ত হতাশাজনক। সুতরাং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে এসকল প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ২টি সিগারেট কোম্পানি প্রতিনিয়ত আইনলঙ্ঘণসহ জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। তাদের এই অবাধ প্রচারনার মূল উদ্দেশ্য কিশোর ও তরুণদেরকে ধূমপানে আকৃষ্ট করা। যা ২০৪০ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যকে ব্যহত করছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম