
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) দুই পক্ষের মধ্যে এই গুলিবিনিময় হয়। সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রথমে ভারতের কয়েকটি পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। জবাবে ভারতের সেনাবাহিনীও গুলি চালিয়েছে।
সূত্রগুলো আরও দাবি করেছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে এক হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর দুই দেশের মধ্যে এই গোলাগুলি হলো।
এই হামলার পরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের সামরিক দূতাবাস কর্মকর্তাদের বহিষ্কার, ৬০ বছরের পুরনো ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত এবং সঙ্গে সঙ্গে অটারি সীমান্ত দিয়ে স্থল পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া।
বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে জানানো হয়, ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানি চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে। ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাকিস্তানের পানি সম্পদ সচিব সৈয়দ আলী মুর্তুজাকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ‘চুক্তির প্রতি সম্মান রেখে তা রক্ষা করা একটি চুক্তির মৌলিক বিষয়। তবে পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাচ্ছে- যাতে চুক্তির মর্যাদা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ইন্দাস চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সময় ও পরিস্থিতির বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে, যা মূল চুক্তির ভিত্তির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এর মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যার গঠনগত পরিবর্তন, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উৎপাদনের তাগিদ এবং পানিবণ্টনের নীতিমালার ভিত্তি বদলে যাওয়া।
পাকিস্তান এর আগে জানিয়েছিল, ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিসহ সব ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিলের চিন্তা করছে তারা। এরই প্রেক্ষিতে ভারত জানিয়েছে, ইন্দাস চুক্তি স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত কেবল যৌক্তিকই নয়, নিরাপত্তাজনিত কারণেও জরুরি।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তান একাধিকবার ভারতের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে, যা সরাসরি চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল।
এই সিদ্ধান্ত বুধবার ভারতের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষককে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম