
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছে গেছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দেইর আল-বালাহের পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদের তাদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর ইসরায়েল গাজার মধ্যাঞ্চলে নতুন করে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে। সর্বশেষ এই হামলার ফলে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যার মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
এদিকে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে আল-নাখিল স্ট্রিটে ইসরায়েলি কামানের গোলাবর্ষণে আট শিশুসহ দশজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে একটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে।
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে শুজাইয়া পাড়া লক্ষ্য করে বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।
একই শহরের জেইতুন পাড়ায় আইন জালুত স্কুলের কাছে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলায় আরও দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ার সালাম পাড়ায়ও কামানের গোলাবর্ষণে আরও চারজন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া কেন্দ্রীয় গাজার জাওয়াইদা এলাকায় একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ড্রোন হামলায় আরও একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে চালানো হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় মানবিক বিপর্যয় এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়েছে। এই হামলা সেখানকার বাসিন্দাদের জীবনের ওপর সব দিক থেকেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। এক বিবৃতিতে অফিসটি জানায়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী 'নিরাপত্তাহীন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অবকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা এবং আবাসিক বাড়িগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে।' তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহ শহরের ৯০ শতাংশেরও বেশি বাড়িঘর, ২৪টি পানির কূপের মধ্যে ২২টি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ৮৫ শতাংশেরও বেশি এবং আটটি স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। এছাড়া সেখানকার ১২টি চিকিৎসা কেন্দ্রও বন্ধ হয়ে গেছে।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, রাফাহ ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনারা যে কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। তিনি ঐ এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। খোদারি বলেন, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনিদের জন্য একমাত্র খোলা পথ হলো উপকূলীয় রাস্তার আল-রাশিদ করিডোর। অর্থাৎ আরো বেশি ফিলিস্তিনিকে খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং ইসরায়েল আরো বেশি ভূমি দখলের চেষ্টা করছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম