
মুসলিম বিশ্বে যখন নেমে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতেরে আনন্দ, ঠিক তখনই ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় শোকের মাতম। ঈদের দিনও উপত্যকায় বর্বর হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। রক্তাক্ত হয়েছেন নতুন পোশাক পরা ফিলিস্তিনিরা।
রোববার (৩০ মার্চ) গাজাজুড়ে হামলায় অন্তত ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন শিশু। আল-মাওয়াসিতে বিমান হামলায় নিহত তিন তরুণীকে ঈদের দিন নতুন পোশাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে। আল জাজিরার সানাদ যাচাইকরণ ইউনিট ওই ফুটেজ যাচাই করেছে।
উপত্যকার বাসিন্দা আদেল আল-শায়ের বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নিজ পরিবারের ২০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "এটি দুঃখের ঈদ", আমাদের প্রিয়জন, সন্তান, জীবন এবং আমাদের ভবিষ্যত সব হারিয়েছি। আমাদের ছাত্র, স্কুল এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানকে হারিয়েছি। আমরা সবকিছু হারিয়েছি।"
এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মুসলমানদের ঈদুল ফিতরের উৎসবের মধ্যেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। সায়েদ আল-কুরদ নামের একজন বেলেছেন, “এখানে হত্যা, বাস্তুচ্যুতি, ক্ষুধা এবং অবরোধ রয়েছে। আমরা বাচ্চাদের খুশি করার জন্য খোদার বিধান পালন করতে চাই, কিন্তু ঈদের আনন্দের নেই, কোনো ঈদ নেই।"
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। গাজায় বোমা বিস্ফোরণ, কামানের গোলার শব্দের মাঝে ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার আর্তনাদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঈদের আনন্দ উদযাপনের জন্য সমবেত হওয়ার পরিবর্তে লোকজন সকালের দিকে প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করেছেন।
আল জাজিরার সংবাদদাতা তারেক আবু আজজুম বলেন, আল-আকসা হাসপাতালের এক মর্গে আমি একজন ফিলিস্তিনি মাকে দেখেছি, যিনি বাবাকে বিদায় জানাতে নিজের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। ওই ব্যক্তি শনিবার ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।