
শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সংস্থা কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)।
ভারতে সংখ্যালঘুরা ক্রমবর্ধমান অমানবিক আচরণের শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিউনিস্ট-শাসিত ভিয়েতনাম ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করেছে। যে কারণে ভিয়েতনামকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ভারতের মতো চীনকে নিয়ে অভিন্ন উদ্বেগের কারণে ভিয়েতনামের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় ওয়াশিংটন।
গত ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যাচেষ্টা করছে, ভারতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে আসছে ওয়াশিংটন ও অটোয়া। এর প্রেক্ষিতে উত্তর আমেরিকার দেশ দুটির সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে শীতলতা বিরাজ করছে।
এদিকে ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক শিখ নেতাকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবকে অভিযুক্ত করেছে। ভারত যদিও শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ‘নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হিসেবে দেখে তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করল ইউএসসিআইআরএফ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে নয়াদিল্লিকে এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের পাল্টা হিসেবে দেখে আসছে এবং সে কারণেই ভারতে মানবাধিকারের বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছরের নির্বাচনী প্রচারণায় ‘মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে ও ভুল তথ্য ছড়িয়েছে।’
এর আগে, গত বছর এপ্রিলে মুসলমানদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করে মোদি বলেছিলেন, তারা ‘বেশি বেশি সন্তান’ নেয়। এর সঙ্গে কংগ্রেসসহ বিরোধীদের ভোটের স্বার্থ রয়েছে বলে মোদির অভিযোগ।
২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, তার সরকারের বিদ্যুৎ ও ভর্তুকির মতো প্রকল্পগুলো সকল সম্প্রদায়কে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ওই স্বাধীন প্যানেল ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের দায়ে ভারতকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসাবে মনোনীত করার এবং যাদব ও র’এর বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।