
গাজা উপত্যকায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তারা দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবি করেছেন, এই সরকার গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হানছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জেরুজালেম ও তেল আবিবের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আয়োজকরা বলছেন, আন্দোলন ক্রমেই গতি পাচ্ছে এবং আগামী দিনে আরও বড় পরিসরে বিক্ষোভ হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের রাস্তায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গাজায় হামলা অব্যাহত রেখে নেতানিয়াহু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইছেন। বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন।
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে।
নেতানিয়াহুর সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেই প্রথমে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেন, "এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন।" তাদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখনো হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জন জিম্মির পরিণতির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিচার প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তা সংকটের কারণে তার সরকারের অবস্থান ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোর থেকে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পর্যন্ত ৫০৬ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে অন্তত ২০০ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা। যদিও এর আগে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খলিল আল-ডাকরানকে উদ্ধৃত করে ৭১০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল সংবাদমাধ্যমটি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২০০ শিশুসহ ৫০৬ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় ৯০৯ জন আহত হয়েছেন।