বৃহস্পতিবার,

১৩ মার্চ ২০২৫,

২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

১৩ মার্চ ২০২৫,

২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

Radio Today News

পাকিস্তানে জিম্মি ট্রেনের সব যাত্রী উদ্ধার, ২৮ সৈন্য নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১২ মার্চ ২০২৫

Google News
পাকিস্তানে জিম্মি ট্রেনের সব যাত্রী উদ্ধার, ২৮ সৈন্য নিহত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর হামলায় জিম্মি হওয়া সব যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে। যদিও এই অভিযানে ২৮ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাইজ্যাক করে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এই ঘটনায় ৪৫০ জনের বেশি যাত্রী জিম্মি হয়েছিলেন।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্সের (আইএসপিআর) ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের হাত থেকে সব যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সব ৩৩ জন সন্ত্রাসীকে মেরে ফেলা হয়েছে। অভিযানে চার ফ্রন্টিয়ার কর্পস সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন।

ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসীরা ১১ মার্চ বোলানে একটি রেললাইনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলা চালায়, জাফর এক্সপ্রেস থামিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা জিম্মিদের, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিল, মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।

তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা জিম্মিদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে রাখে এবং তাদের মধ্যে আত্মঘাতী হামলাকারীদের বসিয়ে দেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর স্নাইপাররা আত্মঘাতী হামলাকারীদের নিষ্ক্রিয় করে।

ডিজি আইএসপিআর নিশ্চিত করেছেন, সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে তাদের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাইজ্যাক করা হয়। বিএলএ এই হামলের দায় স্বীকার করে এবং ট্র্যাকে বিস্ফোরণ ও গানম্যানদের ট্রেনে হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করে। গোষ্ঠীটি দাবি করে, তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিনিময়ে তাদের জেলবন্দি সদস্যদের মুক্তি চায়।

এর আগে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানায়, উদ্ধার অভিযান এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯০ জন যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে এবং ৩০ জন সন্ত্রাসীকে নিহত করা হয়েছে। তবে এখনো কিছু সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।

রেলওয়ে মন্ত্রী বিলাল আজহার কায়ানি জিও নিউজকে বলেন, অভিযান চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি যাতে প্রাণহানি কম হয়। দুর্ভাগ্যবশত, সন্ত্রাসীদের হামলায় কিছু লোক নিহত হয়েছেন, তবে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

সূত্র মতে, সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। তারা নারী ও শিশুদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং আত্মঘাতী বোমা পরা সন্ত্রাসীরা যাত্রীদের পাশে অবস্থান করছে। এই কারণে উদ্ধার অভিযান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বক্তব্যে এই হামলার নিন্দা জানান এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, এই ভীরুতাপূর্ণ হামলা পাকিস্তানের শান্তির সংকল্পকে নড়াতে পারবে না। আমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব।

বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি প্রাদেশিক পরিষদে এই হামলার নিন্দা জানান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালায়, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কঠোর শাস্তি দেবে। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের