
অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় 'আলফ্রেড'। এর ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের পাশ দিয়ে ব্যাপক ঢেউ বইছে। ইতোমধ্যে কিছু এলাকার বাদিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ১৯৭৪ সালের পর প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুত হয়েছে পূর্ব অস্ট্রেলিয়া। সেখানে স্কুলগুলোর পাশাপাশি গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ব্রিসবেন শহর থেকে থেকে ২৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় 'আলফ্রেড'। সরকারি পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে, মূল ভূখণ্ডের দিকে এর গতিবিধি বারবার পরিবর্তন হওয়ায় ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন হয়ে উঠছে।
স্থানীয় আবহাওয়ার প্রতিবেদন বলছে, শুক্রবার দিনশেষে অথবা শনিবার ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি ইতিমধ্যেই কিছু ক্ষয়ক্ষতি করেছে। বিদ্যুৎ সংস্থা এসেনশিয়াল এনার্জি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে তীব্র বাতাসে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
৪০০ কিলোমিটার উপকূলীয় অঞ্চলে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ঝড়ের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে, যারা সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হতে পারে।
ব্রিসবেন শহরের দক্ষিণে গোল্ড কোস্টে ৪০ ফুট উচ্চতার একটি ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া ব্যুরোর পূর্বাভাসক সারাহ স্কুলি এএফপিকে বলেছেন, খুব বড় এবং শক্তিশালী ঢেউ ধেয়ে আসছে।
গোল্ড কোস্টের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ডোনা গেটস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে 'বেপরোয়া আচরণের' জন্য ১০,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানার হুমকি উপেক্ষা করে অনেকেই সৈকতে বেরিয়ে পড়ছে। অনেক মানুষ বিপদের মুখে আছে।
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর উপকূল ঘেঁষে থাকা গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলরাশিতে ঘূর্ণিঝড় সাধারণ বিষয় হলেও দক্ষিণের শীতল জলরাশিতে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া বিরল। গবেষকরা বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দাবানল, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।