ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজশকিয়ান বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার দ্বিধা-বিভক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন দেশে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল।
তেহরান সফররত তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমর বোলাতের সাথে গতকাল (বুধবার) এক বৈঠকে এসব কথা বলেছেন পেজেশকিয়ান। তুর্কি সমর্থিত হায়াতে তাহরির আশ-শাম বা এইচটিএস নাটকীয়ভাবে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার পর এই বৈঠক হলো। সরকারবিরোধী হায়াতে তাহরির আশ-শাম গোষ্ঠীর উত্থানের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ ৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় চলে যান।
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি উল্লেখ করে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, মুসলমানদের মধ্যকার মতভেদের সুযোগ নিয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা, লেবানন এবং সিরিয়ায় আগ্রাসন চালাচ্ছে এবং মুসলমানদেরকে হত্যা করছে।
তিনি বলেন, “আমরা যদি আমাদের মতপার্থক্য বাদ দিতে পারি তাহলে আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী হব এবং সারা বিশ্ব আমাদের সাথে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের ভিত্তিতে যোগাযোগ রাখবে। মুসলমানদের সমস্যাগুলোকে তিনি ভ্রাতৃপ্রতিম আচরণের মাধ্যমে সমাধান এবং শুধু কথায় নয়, প্রকৃতপক্ষেই মুসলিম বিশ্বকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি মুসলিম দেশগুলো তাদের বাণিজ্য বাজার থেকে শুরু করে পরিবহন রুট এবং অন্যান্য সম্ভাবনাকে একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নেয় তাহলে সেটি নিশ্চিতভাবে সমস্ত মুসলিম জাতির জন্য লাভজনক হবে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল কিংবা অন্যরা মুসলিমদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার বা অপরাধমূলক তৎপরতা চালানোর সাহস পাবে না।
বৈঠকে ইরানি প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, “তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তায়েব এরদোগানের সাথে যতবারই তার বৈঠক হয়েছে ততবার তিনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ক ও যোগাযোগ আরো বাড়ানো উচিত।
মাসুদ তেজস্কিয়ান বলেন, তুরস্কর সাথে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নত করতে ইরান প্রস্তুত রয়েছে।
বৈঠকে তুরস্কের মন্ত্রী বলেন, বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ তিন হাজার কোটি ডলারে নেয়ার জন্য দুই দেশ কঠোরভাবে কাজ করছে। ওমর বোলাত বলেন, তার দেশ ইরানের সাথে জ্বালানি খাতে ২৫ বছর মেয়াদী বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের চেষ্টা করছে।
তুরস্ক-ইরান যৌথ অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিশনের ২৯তম বৈঠকে যোগ দিতে তুরস্কের এ মন্ত্রী ইরান সফর করছেন।