উক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় যুক্তরাজ্যের সরবরাহকৃত স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ব্রিটিশ মিডিয়া বুধবার জানায়, লন্ডন থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলো। কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
একজন অজ্ঞাত পশ্চিমা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, অন্তত একটি রাশিয়ান সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
টাইমস জানায়, সরকারি সূত্র প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
দ্য গার্ডিয়ান জানায়, মস্কো সীমান্তে উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটেন ইউক্রেনকে রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
রুশপন্থী ক্রেমলিন সামরিক ব্লগাররা লিখেছেন প্রায় এক ডজন স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র আংশিক ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলকৃত কুরস্ক সীমান্ত অঞ্চলে একটি লক্ষ্যবস্তুতে নিক্ষেপ করা হয়।
ইউক্রেনের মিডিয়ায় পোস্ট করা বিমান থেকে নেওয়া এক ভিডিও ফুটেজে দেশটির মেরিনো নামে পরিচিত এক স্থানে ড্রোন বিস্ফোরণের একটি সিরিজ দেখানো হয়। স্থানটিতে প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের একটি হাসপাতাল রয়েছে।
ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম জানায়, হামলায় ভূগর্ভস্থ সামরিক কমান্ড সেন্টার লক্ষ্যবস্তু করা হয়। মস্কো বা কিয়েভ কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা স্টর্ম শ্যাডো ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
ইউক্রেনের দীর্ঘস্থায়ী অনুরোধের পরে এই সপ্তাহে ওয়াশিংটন বলেছে যে তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে তার এটিএসিএমএস ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে যে ব্রায়ানস্ক সীমান্ত অঞ্চলে একটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
রাশিয়া সম্প্রতি আবাসিক এলাকা ও ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি গ্রিড লক্ষ্য করে মারাত্মক ক্ষপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সারা দেশে প্রতিদিনই এয়ার অ্যালার্ট জারি করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুধবার সকালে বলেছে, তারা ‘সম্ভাব্য উল্লেখযোগ্য বিমান হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর জনসাধারণের জন্য তার কিয়েভ অফিস বন্ধ করে দিচ্ছে। কানাডা, গ্রীস, হাঙ্গেরি, ইতালি, স্পেন ও সমস্ত ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করেছে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বিরল পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন এবং তার মিত্রদের ইউক্রেনীয় সমাজের মধ্যে আরও ভীতি না ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্ব নেতৃবৃন্দ কিয়েভের জন্য আমেরিকার ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো মিত্র তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বুধবার বলেছেন, কিয়েভকে শক্তিশালী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত একটি ‘বড় ভুল’। বাইডেনের এই পদক্ষেপ কেবল সংঘাতকে বাড়িয়ে তুলবে না, বরং রাশিয়ার কাছ থেকে একটি বৃহত্তর প্রতিক্রিয়ার দিকে নিয়ে যাবে।’
এরদোগান, যিনি নিজেকে একজন সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মস্কো প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এবং সামনের সারিতে তার অগ্রগতি অব্যাহত রেখে একটি বিদ্রোহী সুরে আঘাত করেছে।