সম্প্রতি ভারতের মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ১০ হাতির মৃত্যুর খবরে শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিল বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু বরেলির ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রিপোর্টে জানা যায়, ছত্রাক সংক্রমিত কোদো বাজরা খেয়েই হাতিগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
ময়নাতদন্তে হাতিগুলোর পেটে মাত্রাতিরিক্ত বাজরা পাওয়া গেছে। এছাড়া মিলেছে কোদো বাজরার বীজে থাকা অন্যতম প্রধান মাইক্রো-টক্সিন, সাইক্লোপিয়াজোনিক অ্যাসিড। সেখান থেকেই বিষক্রিয়া ছড়ায়।
একসঙ্গে ১০টি হাতি-মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন মধ্যপ্রদেশের বন-মন্ত্রী রামনিবাস রাওয়াত। বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করে মধ্যপ্রদেশ সরকার। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত করতে দিল্লি থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসে বান্ধবগড়ে। ১৪ জন পশু-চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া ময়নাতদন্তে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, হাতিগুলোর পেটে প্রচুর পরিমাণে বাজরা পাওয়া গিয়েছিল। হাতিগুলোকে ইচ্ছাকৃত-ভাবে বিষ খাওয়ানো হয়নি বরং ছত্রাক সংক্রমিত বাজরা খেয়েই মৃত্যু হয়েছে। তবে এর পেছনে অন্য কোনো চক্রান্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।
বন দপ্তরের কিছু কর্মীর তথ্য মতে, অতিরিক্ত কীটনাশক দেওয়া ফসল খেয়ে হাতিগুলোর মৃত্যু হতে পারে সেজন্য, যাদের ক্ষেত থেকে হাতিগুলো বাজরা খেয়েছিল তাদের মধ্যে ছয়জন কৃষককে চিহ্নিতও করা হয়।
গত ২৯ অক্টোবর বিকেলে বান্ধবগড় বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের কোর খিটৌলি এলাকায় জঙ্গলে চারটি হাতির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে বন দপ্তরের কর্মীরা। আশপাশের জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে আরও পাঁচটি হাতিকে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে সেগুলো মারা যায়। শুক্রবার মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরও একটি হাতিকে। বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে , দলে মোট ১৩টি হাতি ছিল। তার মধ্যে দলের একমাত্র পুরুষ হাতি-সহ ১০টির মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনটি হাতির চিকিৎসা চলছে এবং এগুলো সুস্থ রয়েছে।