ইহুদিবাদী ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমের উচ্চ মাত্রার কার্যকারিতা নিয়ে প্রচারণার ধুম্রজাল তৈরি করা হলেও ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে এই ব্যবস্থা কেন ব্যর্থ হলো তা নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক মহলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনএনের বিশ্লেষক ডেকার ইভেলেথ ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ সম্পর্কে লিখেছেন: স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ফুটেজ ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত ইসরাইলি বিমান ঘাঁটি নেভাতিমে একের পর এক আঘাত হানছে এবং আঘাত হানার পর সেগুলো বিস্ফোরিত হচ্ছে।
পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মার্কিন বিশ্লেষকের মতে, ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম সম্পর্কে বহু বছর ধরে ব্যাপক প্রচারণা চালানো সত্ত্বেও এবারের ইরানি অভিযান সফল হয়েছে এবং দেশটির ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আয়রন ডোমের তুলনায় বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর কারিগরি বিশেষত্ব ও তীব্র গতি, ইরানি সেনা কমান্ডারদের বিচক্ষণ কৌশল এবং ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিরূপণে তাদের দক্ষতার কারণে ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফল হয়েছে।
সিএনএনের বিশ্লেষক ডেকার ইভেলেথ আরো বলেন, ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যর্থ করে দেয়ার আরেকটি কারণ ইরানের পক্ষ থেকে একসঙ্গে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ। তিনি বলেন, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা সীমিত এবং সেগুলো অনেক দামী। এর অর্থ হচ্ছে, ইরানের সঙ্গে সংঘাত চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ইসরাইলের আরো বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মার্কিন এই বিশ্লেষক বলেন: ইসরাইল দৃশত ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাতে চায়। কাজেই সম্ভবত গত মঙ্গলবার তেহরান ও তেল আবিবের মধ্যে যে ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় হয়েছে সেটিই এই দুই পক্ষের মধ্যকার সর্বশেষ সংঘাত হবে না। তবে আমার আশঙ্কার জায়গাটি হচ্ছে, যদি সংঘাত দীর্ঘ সময় ধরে চলে তাহলে ইসরাইল তা চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হবে।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এই বিশ্লেষকের মতে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যদি তেল আবিবের মতো শহরগুলোতে অথবা হাইফার নিকটবর্তী তেল শোধনাগারগুলোর মতো মূল্যবান লক্ষ্যবস্তুর দিকে ধেয়ে আসে তাহলে তা আরো বেশি ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠবে এবং তা বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম