
প্রচলিত লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লের (এলসিডি) তুলনায় ওলেড প্রযুক্তি নতুন ও উন্নততর, যা ছবি ও ভিডিওতে বেশি কনট্রাস্ট, উজ্জ্বলতা ও প্রাণবন্ত রঙ উপস্থাপন করে।
বাজার গবেষণা সংস্থা সিগমাইনটেল কনসালটিং-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনে ওলেড প্যানেলের ব্যবহার ৬০ শতাংশে পৌঁছাবে। ২০২৪ সালে ট্যাবলেটে ওলেড ব্যবহারের হার ৫.৭ শতাংশ থাকলেও ২০২৮ সালের মধ্যে তা ১৮ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে ল্যাপটপে ওলেড ডিসপ্লের চালান বছরে প্রায় ৯২ শতাংশ হারে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের শীর্ষ ডিসপ্লে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিওই টেকনোলজি গ্রুপ কো. লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ছেন ইয়ানশুন বলেন, মিড-রেঞ্জ থেকে হাই-এন্ড স্মার্টফোনে ওলেড-এর চাহিদা বাড়ছে এবং কোম্পানি ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ও পরিধানযোগ্য ডিভাইসেও ওলেড ব্যবহারে জোর দিচ্ছে।
বিওই ইতোমধ্যে ছেংতু, মিয়ানইয়াং এবং ছোংছিংয়ে তিনটি ফ্লেক্সিবল অ্যাকটিভ-ম্যাট্রিক্স অর্গানিক লাইট-এমিটিং ডায়োড (অ্যামোলেড) উৎপাদন লাইন চালু করেছে। ছেংতুতে নতুন একটি অ্যামোলেড উৎপাদন লাইন স্থাপনেরও ঘোষণা এসেছে, যেখানে মাঝারি আকারের ল্যাপটপ ও ট্যাবলেটের জন্য হাই-এন্ড টাচস্ক্রিন উৎপাদন করা হবে। ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।
ছেন জানান, বিওই এখন শুধুমাত্র ডিসপ্লে নির্মাতা নয়, বরং উদ্ভাবনভিত্তিক ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) কোম্পানিতে রূপ নিচ্ছে, যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে উৎপাদনশীল খাতে যুক্ত করে আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর ডিসপ্লের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
ওমডিয়া নামক আরেকটি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ফ্লেক্সিবল ওলেড প্যানেল সরবরাহে চীনে শীর্ষস্থান ও বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে বিওই।
সিগমাইনটেল-এর জেনারেল ম্যানেজার লি ইয়াকিন বলেন, ৫জি প্রযুক্তি চালুর ফলে ফোল্ডেবল ফোনে ফ্লেক্সিবল ওলেড প্যানেলের চাহিদা আরও বাড়বে। তাই নির্মাতাদের উৎপাদন দক্ষতা বাড়ানো এবং খরচ কমানো জরুরি।
সিননো রিসার্চ-এর তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ওলেড ডিসপ্লে বাজারে চীনের অংশীদারিত্ব ৫০.৭ শতাংশ, যা প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে।
আরেক ডিসপ্লে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিশনঅক্স টেকনোলজি ইনক.-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিওও জু ফেংইং জানান, ২০২৮ সালের মধ্যে ফোল্ডেবল ফোনে ওলেড স্ক্রিনের চালান ১০ কোটির বেশি ছাড়িয়ে যাবে, যার বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার হবে ৩৪ শতাংশ।
তাদের তৈরি ওলেড স্ক্রিনের মোট চালান ২৪ কোটি ইউনিট ছাড়িয়েছে, এবং ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে পরিধানযোগ্য ডিভাইসে ব্যবহৃত অ্যামোলেড ডিসপ্লে সরবরাহে ভিশনঅক্স বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে।
চু ফেংইং জানান, তারা গাড়ির ডিসপ্লে, অগমেন্টেড রিয়ালিটি, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ও স্মার্ট টিভিতে ওলেড প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে উদ্ভাবনী গবেষণায় আরও বিনিয়োগ করবে।
টিসিএল চায়না স্টার অপটোইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি কো. লিমিটেড ওলেড-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়ে শিল্প খাতে উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা করছে।