বুধবার,

১৯ মার্চ ২০২৫,

৪ চৈত্র ১৪৩১

বুধবার,

১৯ মার্চ ২০২৫,

৪ চৈত্র ১৪৩১

Radio Today News

তারুণ্যের দৃঢ়তা বাড়াতে খেলাধুলাকেই বড় করে দেখছে চীন

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:১৩, ১৮ মার্চ ২০২৫

Google News
তারুণ্যের দৃঢ়তা বাড়াতে খেলাধুলাকেই বড় করে দেখছে চীন

চীনের স্কুলগুলো এখন শুধু পড়াশোনার জন্য নয়, বরং বিভিন্ন আকর্ষণীয় খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখতেও কাজ করছে। সরকারি উদ্যোগে বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ এটি, যা শিশু-কিশোরদের ফিটনেস উন্নত করতে সহায়তা করছে।

বেইজিংয়ে চীনের বার্ষিক ‘দুই অধিবেশন’ অনুষ্ঠানে জাতীয় আইনপ্রণেতা ও রাজনৈতিক উপদেষ্টারাও একমত হয়েছেন, ক্রীড়া কার্যক্রম কিশোর-তরুণদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
 
স্বাস্থ্যকর বিকাশের পথে
২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনে ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ১৯ শতাংশই অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছে। ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২.৭ শতাংশ শিশু চোখের সমস্যা মায়োপিয়ায় আক্রান্ত। 

চীনের ২০৩৫ সালের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় থেকে পুষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচি, শিশুদের স্থূলতা ও মায়োপিয়া নিয়ন্ত্রণ, এবং বিদ্যালয়ের ক্রীড়া ও শরীরচর্চার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ।

বিদ্যালয়ের বিরতির সময় খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন চীনের গণরাজনৈতিক পরামর্শক সম্মেলন সিপিপিসিসির সদস্য লিউ সিয়াওচুন। তিনি বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা কমাতে, দৃষ্টিশক্তি ও ফিটনেস বাড়াতে সহায়ক।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিদ্যালয়গুলো যেন শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্রীড়া পরিবেশ নিশ্চিত করে এবং আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি কমাতে আইনগত ও বিমা ব্যবস্থা চালু করে।

সিপিপিসিসি সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই একমত পোষণ করে বলেন, দলগত খেলাধুলা সামাজিক সংযোগ বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়। 

সাবেক চীনা নারী বাস্কেটবল খেলোয়াড় মিয়াও লিচিয়ে জানান, খেলাধুলা জীবনকে বদলে দিতে পারে। তিনি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বলেন, কীভাবে তিনি প্রথমে তার উচ্চতার কারণে বাস্কেটবল দলে সুযোগ পাননি, কিন্তু পরে এনবিএ ও ডব্লিউসিবিএ চ্যাম্পিয়ন হন।
 
দিনে দুই ঘণ্টা
চীনে আগে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার জন্য সময় পেত কম। তবে তাতে পরিবর্তন ও ফিটনেসে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের ফলে এখন শিশুরা মাঠ, সুইমিং পুল এমনকি বরফের রিঙ্ক ও স্কি স্লোপেও খেলাধুলা উপভোগ করছে।

চীনের সরকার বিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের দৈনিক কমপক্ষে দুই ঘণ্টা শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে।
জাতীয় গণকংগ্রেস এনপিসির প্রতিনিধি চাং সিয়া বলেন, ‘বিদ্যালয়গুলোতে উপযুক্ত প্রশিক্ষকের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দের অন্তত একটি বা দুটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।’
 
খেলায় বৈচিত্র্য
চিয়াংসু প্রদেশের নানচিংয়ের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পপ মিউজিকের তালে শরীরচর্চা করছে। নানতোং শহরের আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে দেখা যাবে সমন্বিতভাবে মোবাইল গেম 'স্নেক'-এর মতো কৌশলগত দৌড়ের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
 
‘বিদ্যালয়গুলো এখন শিক্ষার্থীদের আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সৃজনশীল ক্রীড়া ক্লাস ও কার্যক্রম ডিজাইন করতে উৎসাহিত হচ্ছে,’ বলেন চিয়াংসুর এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং এনপিসি’র উপদেষ্টা চেন হংবিন।

তিনি বলেন, গ্রামীণ বিদ্যালয়গুলোতেও ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোচের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

স্কুল ভলিবল কোচ ও এনপিসি প্রতিনিধি ফান তংওয়েই সুপারিশ করেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সনদ ও পুরস্কার দেওয়া হোক, যাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণ বাড়ে এবং নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করা যায়।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের