বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের যেসব নারী ও কিশোরী রয়েছেন তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ১৬ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছে চীন। এই অনুদানের আওতায় এমন কিছু সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে যা নির্মাণে কাজ করেছেন বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা নারীরা। ফলে এই নারীদের আয় রোজগারও বেড়েছে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত নারী ও কিশোরী শরণার্থীদের জন্য আড়াই লাখেরও বেশি হাইজিন কিট উপহার দিয়েছে চীন। রোহিঙ্গা নারীদের কাছে এসব কিট পৌঁছে দেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ইউএনএইচসিআর।
সম্প্রতি বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর নবনিযুক্ত প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইয়াও ওয়েন এ অনুদানের কথা ঘোষণা দেন।
স্বাস্থ্যবিধি উন্নয়নে চীনের ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের এ উপহারকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এই হাইজিন কিটগুলো সরবরাহ করতে ইউএনএইচসিআর ও চীন সরকার একসঙ্গে কাজ করবে। চীনের অনুদান নিশ্চিত করবে নারীদের জন্য গোসলের ও কাপড় ধোয়ার সাবান এবং বালতিসহ কিছু সামগ্রী।
কক্সবাজারে শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশীদের মধ্য থেকে দুইশর বেশি নারী এই হাইজিন কিটগুলোর বাকি জিনিসগুলো তৈরি করবেন। এর মাধ্যমে তারা তাদের দক্ষতাকে নিজ জনগোষ্ঠীর কাজে ব্যবহার করতে পারবেন এবং সীমিত পরিসরে জীবিকামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের স্বনির্ভর করার একটি প্রয়াস পাবেন। ১২ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরী চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সির মাধ্যমে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এর সুফল পাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা নারীদের আয় রোজগারও বৃদ্ধি পাবে।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের পর থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জনগণের জন্য যে উদারতা দেখিয়েছেন এটি মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত। গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে চীন তার দায়িত্ব পালন করছে এবং বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে ইউএনএইচসিআর-এর আরও কর্মকাণ্ডে চীন সম্পৃক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
ইউএনএইচসিআর-এর রিপ্রেজেন্টেটিভ সুম্বুল রিজভী বলেন, শরণার্থী নারীরা এ কিটের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন। তাদের কাছে এটি অতি প্রয়োজনীয়, আর নিজ সমাজের নারীদের মাধ্যমে তৈরি এই সামগ্রীর গুণগত মান নিয়েও তারা সন্তুষ্ট।
প্রতিবেদন: শুভ আনোয়ার
সম্পাদনা: শান্তা মারিয়া