রোববার,

০৯ মার্চ ২০২৫,

২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

রোববার,

০৯ মার্চ ২০২৫,

২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

Radio Today News

গরমে শিশুদের চিকেন পক্স সংক্রমণ রোধে সতর্ক থাকতে হবে  

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ৫ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ০৭:৪৬, ৫ মার্চ ২০২৫

Google News
গরমে শিশুদের চিকেন পক্স সংক্রমণ রোধে সতর্ক থাকতে হবে  

গত কয়েকদিন ধরে চোখে ঘুম নেই শান্ত আর রাহেলার। তাদের দুই বাচ্চারই প্রচন্ড জ্বর আর চিকেন পক্স। সাড়ে সাত বছর বয়সী রাইসুল আর পাঁচ বছর বয়সী জামিলা দু’জনেই কাঁদছে সমানতালে। আর তাই ক্লান্ত শরীরেই শান্ত আর রাহেলা ব্যস্ত হয়ে আছে তাদের বাচ্চা দু’টিকে শান্ত করতে। মাঝে-মাঝে সন্তানের কষ্ট দেখে তারা নিজেরাই কেঁদে উঠছে।

বিশেষজ্ঞের মতে জলবসন্ত বা চিকেন পক্স একটি সংক্রামক ব্যাধি। পরিবারের কারো হলে তা অন্যদের বিশেষ করে শিশুদের মাঝেও সংক্রমিত হয়। ছোট-বড় সবাই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুরা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশী থাকে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, ছোট কিংবা বড় সবাই এই চিকেন পক্সে আক্রান্ত হতে পারে। তবে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশী। এটি একটি সংক্রামক ব্যাধি। পরিবারের একজনের হলে অন্যদেরও হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে শিশুদের। মূলত ভেরিসেলা জোস্টার ভাইরাস’র কারণে এই চিকেন পক্স হয়।

তিনি বলেন, মূলত গরমের শুরুতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়। কারণ এসময় আবহওয়া বেশ শুষ্ক থাকে। ফলে শিশুরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় বেশী। 

তিনি জানান, শুরুতে সামান্য জ্বর হতে পারে। পরে শরীরে এক ধরনের ফোসকা পড়ে। এসময় রোগীর প্রচন্ড জ্বর হতে পারে এবং সারা শরীর চুলকায়। কিন্তু আঙ্গুলের নখ দিয়ে চুলকানো কোনভাবেই উচিত নয়। কারণ এরফলে ফোসকা গলে যেতে পারে এবং তা শুকানোর পর অনেকটা চামড়ার ভিতরে ঢুকে যায় এবং গর্ত হয়ে যায়। এসময় না চুলকিয়ে কোন গাছের পাতা বিশেষ করে নিম গাছের পাতা রোগীর শরীরে বুলিয়ে দিলে রোগীর চুলকানি অনেকটা লাঘব হয়।
 
ডা. সোহাগ বলেন, এ রোগ দ্রুত বাতাসের মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত হয়। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, থেকেও এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে। 

ডা. মনোয়ারা হক বলেন, জলবসন্ত হওয়ার পূর্বে শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন শরীর ম্যাজম্যাজ করা, গা-হাত-পা ব্যথা করা এবং মাথাব্যথা করা। এর পাশাপাশি একটু সর্দি-কাশিও হতে পারে। এসময় রোগীর গায়ে সামান্য জ্বর আসতে পারে। এরপর শরীরে ছোট ছোট বিচি অথবা ঘামাচির মতো কিছু উঠতে দেখা যায়। তারপর সেটা একটু পরে বড় হতে থাকে এবং ভেতরে পানি জমতে থাকে।

তিনি বলেন, চিকেনপক্স হওয়ার পর রোগীর জ্বর অস্বাভাবিক রকমের বেড়ে যেতে পারে এবং শরীর খুব দুর্বল হয়ে যায়। এতে ভয় পেয়ে যাওয়ার কিছু নেই। এসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে জ্বর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে শিশুদের জলবসন্ত কোনো বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন হয় না। এটি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে রাখাই উত্তম।

তারপরও কোন অভিভাবক ভয় পেয়ে গেলে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শিশুদের ওষুধ সেবন করাতে পারেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

ডা. মনোয়ারা বলেন, চিকেন পক্স হলে খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। কারন এসময় রোগীর খাওয়ার রুচি থাকে না বললেই চলে। তবে এসময় রোগীকে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করাতে হবে। এছাড়াও ডাবের পানি খাওয়ানো যায়। এর পাশাপাশি রোগীকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। 

এছাড়াও রোগীর কাপড়, ব্যবহৃত বিছানাসহ অন্যান্য কাপড় ভালো করে ধুঁয়ে ফেলতে হবে। কারণ জলবসন্ত একটি সংক্রামক ব্যাধি। 

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের