
বাংলাদেশে কম ঝুঁকিপূর্ণ নিকোটিন বিকল্পের উপর প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা এবং নীতি প্রণয়ন সংস্থা থলোস ফাউন্ডেশন। এই পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলছে সংস্থাটি। গতকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি চিঠিতে ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক এই সংস্থাটি তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছে। যেখানে প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় নিরাপদ নিকোটিন বিকল্প পণ্য যেমন ই-সিগারেট, হিট-নট-বার্ন পণ্য এবং নিকোটিন পাউচসহ কম ক্ষতিকর পণ্যগুলো ধূমপান জনিত রোগ ও মৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হতে পারে বলেও চিঠিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের উদ্দেশ্যে লেখা এই চিঠিতে থলোস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এই পণ্যগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে ধূমপায়ীদের নিরাপদ বিকল্প বেছে নিতে নিরুৎসাহিত করবে। ফলে তামাকজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলবে। আরও উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে প্রতিবছরে এক লাখের বেশি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঘটে। সঠিকভাবে ও নিয়ন্ত্রিতভাবে এসব বিকল্প পণ্য ব্যবহার এই ক্ষতি কমানো সম্ভব হতে পারে।
এছাড়াও ফাউন্ডেশনটি উদাহরণ তুলে ধরেছে যে, বিশ্বব্যাপী যেসব দেশে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে, সে দেশগুলোতে ইতোমধ্যে সফলভাবে ধূমপানের হার কমেছে। সুইডেনে ধূমপানের হার মাত্র পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ। যা সম্ভব হয়েছে তুলনামূলক কম ক্ষতিকর নিকোটিন নির্ভর বিকল্প পণ্য ব্যবহারে। এছাড়াও নিউজিল্যান্ডে ধূমপান ছাড়ার সহায়ক হিসেবে ভেপিংকে গ্রহণ করায় ধূমপানের হার ব্যাপকহারে কমে ছয় দশমিক আট শতাংশে নেমে এসেছে।
চিঠিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ধূমপানজনিত রোগের মূল কারণ তামাক পোড়ানোর ফলে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক। ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (পূর্বের পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড) এবং রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস এর গবেষণা বলছে ভেপিং ধূমপানের তুলনায় অন্তত ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর।
সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর এসব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে নিয়ন্ত্রিত নিকোটিন পণ্যের কালো বাজারের প্রসার বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে থলোস ফাউন্ডেশন। এসব পণ্যগুলোকে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে সরকারকে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিবর্তে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দিয়েছে থলোস।
সংস্থাটি বাংলাদেশকে বিজ্ঞানভিত্তিক তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিহ্রাস কৌশল সমন্বিতভাবে প্রয়োগ করে ধূমপায়ীদের জন্য নিরাপদ বিকল্প প্রদান করা হবে।